২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে আজ রাতে বিমানে আসছে পেঁয়াজ

কার্গো বিমানে করে মিসর, তুরস্ক ও চীন থেকে পেঁয়াজ আসার কথা থাকলেও পেঁয়াজ লোডিংয়ে সমস্যা হওয়ায় ২৪ ঘণ্টা পিছিয়েছে। এ কারণে আজ বুধবার দিবাগত রাত ১২টা নাগাদ পেঁয়াজ দেশে আসতে পারে বলে বিমানের কার্গো শাখার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আমাদের একটি টিম ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত আছে। বিমান পৌঁছলেই আমরা তাদের সহায়তা করব। এ ছাড়া এসব পেঁয়াজে কোনো ধরনের শুল্ক চার্জ ধরা হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রিতে এসব পেঁয়াজের চালান খালাস করা হবে।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, আমদানি করা পেঁয়াজ বিমানে আনা প্রথম চালান আজ বুধবার পৌঁছবে। এটি মঙ্গলবার আসার কথা ছিল। পেঁয়াজ লোডিংয়ে সমস্যা হওয়ায় ২৪ ঘণ্টা পিছিয়েছে। বিমানে আনা পেঁয়াজ টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।

এ ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দেবে। পেঁয়াজবাহী বিমান দেশে পৌঁছলেই চার-পাঁচশ ট্রাকের মাধ্যমে সারা দেশে বিক্রি শুরু হবে। যাতে সব জায়গায় দামটা কমে যায়।

বুধবারও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত ছিল। টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রে সাধারণ ক্রেতার উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।

রাজধানীর ৩৫টি স্থানে ৪৫ টাকা কেজি দরে পণ্যটি বিক্রি করেছে টিসিবি।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ ক্রেতারা ৩-৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে পেরেছেন। তবে এর পরিমাণ যদি দুই কেজি হতো, তা হলে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হতো।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর সর্ববৃহৎ পেঁয়াজের পাইকারি আড়ত শ্যামবাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা।

যা একদিন আগে (সোমবার) বিক্রি হয়েছে ১২৫-১৬০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের মধ্যে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-১১০ টাকা, যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১২৫ টাকা।

এ ছাড়া নতুন পাতাসহ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা, যা একদিন আগে বিক্রি হয় ৯০-১০০ টাকা।

একই দিন রাজধানীর নয়াবাজার, রামপুরাবাজার, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা একদিন আগে (সোমবার) বিক্রি হয়েছে ২২০-২৩০ টাকা দরে।

আমদানি করা মিয়ানমার ও মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা, যা একদিন আগে বিক্রি হয় ২০০-২১০ টাকা। এ ছাড়া নতুন পাতাসহ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা, যা একদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা।

জানতে চাইলে শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ আড়তদার ও আমদানিকারক শঙ্কর চন্দ্র ঘোষ যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে গত দুদিনে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে।

যে কারণে গত দুদিন ধরে পেঁয়াজের দর কমছে। সর্বশেষ একদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার কমেছে ১০-৩০ টাকা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আদেশে পেঁয়াজের চালান দেশের বাজারে আসছে।

আর এ পেঁয়াজ সরবরাহ শুরু হলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে। তা ছাড়া দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে।

আর দিন যত যাবে আরও বেশি সরবরাহ বাড়বে। তখন পেঁয়াজের দর কেজিতে ২৫-৩০ টাকা চলে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সেগুনবাগিচা বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন বলেন, গত একদিনের ব্যবধানে খুচরাবাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে।

পাইকারি বাজার থেকে কম দামে পেঁয়াজ আনা যাচ্ছে। তাই পেঁয়াজের দাম খুচরা পর্যায়েও কমেছে। এ চিত্র অব্যাহত থাকবে।

জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, আকাশপথে আসা পেঁয়াজ টিসিবি গ্রহণ করতে প্রস্তুত আছে। আর অতি অল্প সময়ের মধ্যে তা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে টিসিবির ডিলাররা প্রস্তুত।
সূত্র যুগান্তর

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।