সর্বশেষঃ

মাছ ব্যবসায়ী শুধু ডাক্তার-ই নন, করেন অপারেশনও

দেশে ভুয়া চিকিৎসকের সংখ্যা নেহাত কম না হলেও এবারের খবরটি আরও ভয়াবহ। শুধু রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধতা ছিল এই দুর্বৃত্তায়ন। এই দুর্বৃত্ত মাছের ব্যবসায়ী হয়েও ডাক্তার সেজে ছুরি-কাচি নিয়ে ঢুকে পড়েছেন অপারেশন থিয়েটারে! পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এমনই এক ভুয়া চিকিৎসকসহ আরও এক ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া র‌্যাব অভিযান চালিয়ে মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল ওরফে মাছ মোস্তফা (৪০) এবং আমির হোসেন (৪৫) নামে আরেক ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে মোস্তফা কামালা ওরফে মাছ মোস্তফার নিজের মালিকানাধীন ক্লিনিকে এবং আমির হোসেনকে অন্য একটি ক্লিনিক থেকে গ্রেফতার করা হয়। মোস্তফা কামালা মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এবং আমির হোসেন নোয়াখালীর শাহাজাদপুর উপজেলার আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে।
র‌্যাব-৮ জানায়, অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল র‌্যাব-৮ একটি দল আকস্মিক অভিযান চালিয়ে শহরের দক্ষিণ বন্দর মাহিমা ক্লিনিকের মালিক ও কথিত চিকিৎসক মোস্তফা কামাল ওরফে মাছ মোস্তফা ও উপজেলার ধানীসাফা বন্দরের হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকের ভুয়া চিকিৎসক আমির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই দুই ভুয়া চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে মহিমা ক্লিনিকের মালিক মোস্তফা কামলকে তিন মাস ও অপর ভুয়া চিকিৎসক আমির হোসেনকে ৬ মাসের দ- প্রদান করেন। র‌্যাব-৮ এর ওই অভিযানে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী এ দণ্ডাদেশ দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দণ্ডিত ভুয়া চিকিৎসক মোস্তফা কামাল মঠবাড়িয়া পৌর শহরের মাছের আড়তের ব্যবসা করে আসছেন। ২০০৯ সালে তিনি শহরের হাসপাতাল সড়কে মহিমা ক্লিনিক নামে একটি হাসপতাল চালু করেন। ওই হাসপাতালে নিজেই মালিক আবার নিজেই চিকিৎসক সেজে সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলেন। ক্লিনিকের বৈধ অনুমোদন না থাকলেও তিনি প্রভাবশালীদের মদদে ক্লিনিক পরিচালনা করছেন। তিনি ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক নিয়োগ না দিয়ে নিজেই প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলে। ইতি পূর্বে ক্লিনিকে কয়েক দফা প্রসূতি নারীর মৃত্যুসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনা টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মোস্তফা নিজেই মালিক নিজেই চিকিৎসক হয়ে রোগীদের ঝুঁকিতে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অপর দিকে উপজেলার ধানীসাফা বন্দরের হাজী আ. রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকের চিকিৎসকের কোনো বৈধ কাগজ ও সনদ পত্র না থাকা সত্বেও ভুয়া ডাক্তার সেজে সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপনে অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৮ এর একটি দল এ দুই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে ক্লিনিক দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া শহরের বহেরাতলা সৌদি প্রবাসীর হাসপাতালে অভিযান চালানো হলে সেখানে ভুয়া চিকিৎসক মো. জিয়াকে না পেয়ে ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. মনির হোসেনকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদ-াদেশ প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্থাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী হাসান জানান, ক্লিনিকে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে সিজারিয়ান অপরেশন করা দুঃখজনক ও ঝুঁকির ব্যাপার। এসব ক্লিনিক ও কথিত চিকিৎসকদের যথাযথ অনুমোদ আছে কিনা আমার জানা নেই।

সুত্র : https://www.ittefaq.com.bd/wholecountry/165515

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।