সর্বশেষঃ

আমাদের বিবস্ত্র করে রাখা হতো, মনে হতো কসাইখানায় আছি

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীরা সেখানে ঘটে যাওয়া অমানুষিক নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। নিয়মিত মারধর, অপমান, ইলেকট্রিক শক, অনাহার, চিকিৎসা না দেওয়া এবং বিবস্ত্র করে রাখার মতো অমানবিক আচরণের শিকার হয়েছেন তারা। ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেক বন্দীই কারাগারকে ‘কসাইখানার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। সোমবার ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া হাজারো ফিলিস্তিনি গাজায় পৌঁছানোর পর প্রিয়জনদের ভিড় জমে। মুক্তিপ্রাপ্তদের সকলের চেহারা ছিল মলিন এবং ওজন অস্বাভাবিকভাবে কম। বন্দীদশায় তারা যে অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করেছেন, তা তাদের চেহারায় স্পষ্ট।
মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিরা জানান, কারাগারে প্রতিদিন বহুবার তাদের মারধর ও গালাগালি করা হতো। দিনের পর দিন অনাহারে রাখার পর সামান্য পরিমাণ খাবার দেওয়া হতো। অসুস্থ হলেও মিলত না কোনো চিকিৎসা। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি চলতো মানসিক নির্যাতনও। কারা কর্তৃপক্ষ প্রতি মুহূর্তে তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দী বলেন, মনে হতো যেন কোনো কসাইখানায় আছি। আমাদের বিবস্ত্র করে রাখা হতো, প্রতিদিনই অনেকবার মারধর করতো, ইলেকট্রিক শক দিতো। প্রতি মুহূর্ত ভয় আর যন্ত্রণায় কেটেছে। সেখানে এতো কষ্ট সহ্য করেছি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
আরেক কারাভোগকারী বলেন, কারাগারগুলোর অবস্থা খুবই ভয়াবহ। ভাবতে পারিনি জীবিত ফিরতে পারব। সেখানে প্রতিদিন ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত থাকতাম। ওদের মারধরে আহত হলেও ওষুধ দিতো না। যন্ত্রণায় কাতরাতাম। ফিলিস্তিনি বন্দীদের অভিযোগ, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বন্দীর ওপর নির্যাতন চালালেও গাজা থেকে আটক হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন ছিল সীমাহীন। এখনও যেসব ফিলিস্তিনি কারাগারে আছেন, তাদের ওপর একই ধরনের নির্যাতন চলছে বলে তারা জানান। এদিকে, সোমবার মুক্তিপ্রাপ্ত ১৫৪ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক নির্বাসনে পাঠিয়েছে ইসরায়েল। এই পদক্ষেপকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্বজনরা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।