ভোলায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠানে আমিনুল হক
জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে খেলাধুলার ৫টি ইভেন্টকে বাধ্যতামূলক করা হবে

ভোলার বাণী রিপোর্ট ॥ ভোলার দৌলতখানের কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ ক্রীড়া বিয়ষক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ জাতীয় দললের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেছেন, আল্লাহ তালায় যদি আমাদেরকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কে যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত করে তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা প্রত্যোকটি স্কুলে ৪র্থ শ্রেণী থেকে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম রয়েছে সেখানে খেলাধুলার ৫টি ইভেন্টকে বাধ্যতামূলক করা হবে। সেই খেলাধুলার মাধ্যমে যেভাবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ্য জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। ঠিক তেমনি ভাবে খেলাধুলার যে পাইপ লাইন রয়েছে সেখান থেকে ভালো ভালো খেলোয়ার তৈরী হওয়ার রাস্তা তৈরী হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনরা জানেন যে ৮০’র দশকে নতুন কুড়ির মাধ্যমে একটি সুস্থ্য সাংস্কৃতিক অবস্থান তৈরী হয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে নতুন কুড়ি স্পোর্টস নামে আমরা একটি কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। তার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে প্রতিভাবান ক্ষুদে খেলোয়ার রয়েছে তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সারাদেশের যেখানে প্রতিভাবান খেলোয়ার রয়েছে তাদের খুজে বের করে তাদেরকে ভবিষ্যতে আমরা রাষ্ট্রিয়ভাবে পড়াশুনা ও খেলাধুলার সকল দায়-দায়িত্ব সরকার বহন করবে। আমরা এই কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন করতে চাই। যে পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা গতানুগতিক রাজনীতি থেকে বের হয়ে এসে এই খেলাধুলার মাধ্যমে আমরা একটা সামাজিক পরিবর্তন আনতে চাই। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভোলার গজনবী স্টেডিয়ামে “ঢাকা মিরপুর সোনালী অতীত ক্লাব বনাম ভোলা সোনালী অতীত ক্লাব” এর মধ্যকার প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন বিগত স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। তেমনিভাবে দলীয়করণের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনকেও ধ্বংস করেছে। আমরা আগামীতে দলীয়করণ মুক্ত হয়ে একটি আধুনিক ক্রীড়াঙ্গন প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপির মত ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। যাতে করে প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে মান সম্পন্ন খেলোয়ার তৈরী হতে পারে।
আমরা সেই স্বৈরাচার আমল থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিভাগে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। এছাড়া ২০২৪ সালের ৫ তারিখ পরবর্তীতে সারাদেশে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। আমরা এইভাবে সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খেলাধুলার মাধ্যমে আগামীর প্রজন্মকে সুস্থ্য জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন আমাদের যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে ধ্বংসের পথে চলে গেছে। তাই আমাদের ভবিষ্যথ যুব সমাজকে খেলাধুলার মাধ্যমে আকৃষ্ট করে একটি মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে চাই।
আপনারা দেখেছেন বিগত সরকারের আমলে জেলা কিংবা উপজেলাগুলোতে ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলা হতো না। আমরা প্রতি মাসে দেশের এক একটি জেলায় গিয়ে খেলাধুলাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এরকম প্রীতি ফুটবল ম্যাচসহ অন্যান্য খেলার মাধ্যমে জেলা-উপজেলাগুলোতে খেলাধুলার একটি নতুন জাগরণ সৃষ্টি করতে চাই। যে জাগরণের মাধ্যমে আমরা একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক গুনগত পরিবর্তন আনতে পাই। রাষ্ট্রিয়ভাবে পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ করতে চাই।
ভোলার খেলাধুলার বিষয়ে আমিনুল হক বলেন, আমরা আজকের এই প্রীতি ফুটবল ম্যাচের মাধ্যমে ভোলায় একটি নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছি। আমরা পর্যায়ক্রমে শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেটসহ সকল খেলাধুলায় ভোলা জেলাকে ক্রীড়াঙ্গনের একটি সমৃদ্ধশালী জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
প্রীতি ফুটবল ম্যাচের অনুষ্ঠানে ভোলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আজাদ জাহান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার শরীফুল হক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খান, হুমায়ুন কবির সোপান, বরিশাল বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক মো: জাহিদ ইকবাল আলমাছ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো: মিজানুর রহমান মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো: হেলাল উদ্দিন এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য মো: নজরুল ইসলাম গোঁফরান। পুরো খেলাটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ভোলা সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি খন্দকার আল-আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামালসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সরকারী কর্মকর্তাগণ। ঢাকা দলের হয়ে খেলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা স্ট্রাইকার আলফাজ, কাঞ্চন, ডন, জাহিদ পারভেজ এ্যামিলিসহ আরও অনেকে। অপরদিকে ভোলার দলটির নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক ঈমান আলী। তার সঙ্গে মাঠে নামেন মোস্তফা কামাল, রনি, ভাই গোপাল, ঝন্টু, মিলন, রবিন চৌধুরী ও মহিউদ্দিন।
প্রীতি ফুটবল ম্যাচ দেখতে ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামে দর্শকদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। প্রীতি ফুটবল ম্যাচে অংশ নেয় ঢাকা মিরপুর সোনালী অতীত ক্লাব বনাম ভোলা সোনালী অতীত ক্লাব। খেলায় ঢাকা মিরপুর সোনালী অতীত ক্লাব প্রথমার্ধেই ৪টি গোল করে এগিয়ে যায়। তারপর ভোলা সোনালী অতীত ক্লাবের সদস্যরা ১টি গোল করতে সক্ষম হয়। খেলায় টান-টান উত্তেজনা বিরাজ করে। ভোলা সোনালী অতীত ক্লাবের খেলোয়াররা গোল করতে মরিয়া হয়ে পড়েন। দ্বিতীয়ার্ধে ভোলা সোনালী অতীত ক্লাবের খেলোয়াররা আরো ১টি গোল করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উভয় দল আর কোন গোল করতে সক্ষম হয়নি। ঢাকা মিরপুর সোনালী অতীত ক্লাব ৪-২ গোলের ব্যাবধানে ভোলা সোনালী অতীত ক্লাবকে পরাজিত করে। খেলা শেষে বিজয়ী এবং বিজীত দলের খেলোয়ারদের মাঝে ট্রফি তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।