সর্বশেষঃ

৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ, আজ মধ্যরাত থেকে সমূদ্রে মাছধরা শুরু

আল-আমিন শাহরিয়ার ॥ উপকুলীয় জেলা ভোলা ও তৎসংলগ্ন জেলাগুলোর বঙ্গোপসাগরে আজ ১১ জুন মধ্যরাত ১২ টার পর থেকে মাছধরা শুরু হচ্ছে। গত ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে আজ (১১ জুন) পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন দেশের সমুদ্রে
যে কোন প্রজাতির মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছিলো সরকার। অবশেষ আজ মধ্যরাতে সেই নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হচ্ছে। গত ১৫ এপ্রিল রাত ১২ টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিলো। এসময় জেলেদেরকে সরকার ৭৮ কেজি করে চাল দিয়েছেন। ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, ভোলা জেলায় সমুদ্রগামী জেলেদের সংখ্যা মোট ৬৫ হাজার। এসকল জেলেরা ১৫ এপ্রিল থেকে ৫৮ দিন সমুদ্রে মাছধরা থেকে বিরত রাখা হয়েছিলো। এ সময়টাতে সরকার তাদের মাথাপিছু ৭৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ করেছেন। যা ইতিমধ্যেই এসব জেলেদেরকে বিতরন করা হয়েছে। মৎস্যকর্তা জানান, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবারের মতো এবারও এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল।
তিনি বলেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয় কর্তৃক এক  প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ এর বিধি ৩ এর উপবিধি (১) এর দফা (ক) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, সরকার, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল হতে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮  দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যে কোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সমুদ্রে কোষ্টগার্ড, নৌবাহিনী ও মৎস্য বিভাগের টাষ্কফোর্স তাদের টহল কার্যক্রম পরিচালনা করেন বলেও জানান,এ কর্মকর্তা।

তথ্যমতে, ভোলায় সরকারের নির্ধারিত তালিকার বাইরেও সমুদ্রগামী জেলের সংখ্য্য লক্ষাধিক হবে বলে দাবী করেছেন মৎস্য আহরনে নিয়োজিত জেলে সমিতির নেতারা। ভোলা সদর ইলিশা মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: বাদশা মিয়া জানান, ভোলা হতে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া প্রকৃত জেলের সংখ্যা এক লাখের উপরে ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু এসব জেলেদের সরকারী প্রনোদনা দেয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আজ সকালে ভোলার মেঘনাপাড়ের তুলাতুলি নামক এলাকার জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘ ৫৮ দিনের মাছধরা নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যেতো জেলেরা সকল প্রস্তুতি শেষকরে জাল, খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে রওয়ানা দিয়েছেন। মাছধরা নিয়ে কথা হয় সমুদ্রগামী জেলে মহব্বত মাঝি,রুস্তম আলী ও কালিমুল্লাহ মাঝির সাথে । তারা জানান, বিগত আ’লীগ আমলে আমাদেরকে নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারী চাল দেয়া হতোনা। প্রকৃত জেলেদের বাদ রেখে দলীয় স্বচ্ছল কর্মীরা জেলেদের চাল লুটপাট করে নিয়ে যেতো। তবে সেই আশঙ্কা এখন আর না থাকায় এবার নিষেধাজ্ঞাকালীন তারা সঠিকভানে চাল পেয়ে খুশী ।

জেলেরা জানান, যেহেতু ভারতের সাথে মিল রেখে ৫৮ দিন সাগরে মাছরায় নিষেধাজ্ঞা ছিলো, সেহেতু এবার আমরা প্রচুর মাছ ধরতে পারবো। এতে গত দুই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে উঠাতে পারবেন বলেও প্রত্যাশা ভোলা উপকুলের প্রান্তিক জেলেদের।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।