তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে যুবসমাজের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
জীবনের ডায়েরী থেকে গল্প সমগ্র : পর্ব-০৬

[ ড. টি. এন. রশীদ ]
(গত পর্বের পর) : ১৯৪৯ সালে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের বিরোধী শক্তি হিসেবে মানকী শরীফের পীর সাহেবের দল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর দল, মাওলানা ভাষানীর দল একত্রিত হয়ে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে বিরাট রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আমি তখন পাকিস্তান মহিলা রক্ষী বাহিনীর কমান্ডার ও ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত ছিলাম। আমি খুলনায় থাকলেও ঢাকার এবং দেশের কোথায় কী হচ্ছে তার খবরা খবর জানতে পারতাম। ১৯৫২ সালে তখন জিন্নাহর মৃত্যুর পরে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন খাজা নাজিম উদ্দিন। তিনি পল্টনে ২৬ জানুয়ারী ভাষন দিতে গিয়ে তিনি দম্ভের সঙ্গেই সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ফলে পূর্ব বাংলার ছাত্র জনতা এবং রাজনীতিকরা স্বাভাবিক ভাবেই নাজিম উদ্দিনের এই দাম্ভোক্তিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করল। তিন দিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট এবং প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৩১ জানুয়ারী মাওলানা ভাষানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সর্বদলীয় সভা। এ সময় আমি চুপ থাকতে পারলাম না। কাগজ-কলমে প্রতিবাদ জানালাম।
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হবে
বাংলাদেশের দাবিরে,
শান্তি সুধা স্নিদ্ধ বারি
মায়ের মত পাবিরে।
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হবে
বাংলাদেশের দাবিরে।
লড়তে হবে লড়বি
ভয় কি স্বাধীন দেশে,
নওযোয়ানের নর তোরা
দ্বিগ্বিজয়ী বেশে।
এগিয়ে চল, এগিয়ে চল
শাসন তন্ত্রের কাছে
বাংলা ছাড়া বাঙ্গালীর
আর কি তাদের আছে ?
বৃটিশ যখন এল
ইংরেজী হল ভাষা
একশ’ জনের মধ্যে
নব্বই হইল চাষা।
দুইশ’ বছর পরে
ভারত স্বাধীন হল,
জীবন মরণ ব্রতে,
রইবে কতই বল।
ভাবলাম বুঝি এই
ফুটবে বুকের ভাষা,
চলবে স্বাধীন ভাবে
পুরবে মনের আশা।
বাংলার দাবী দাওয়া
মানতে সকল বাধ্য
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হবে
ফেলবে কাহার সাধ্য।
সকল দেশের লোক
শুনবে যখন তারা
বাঙ্গালীর শৌর্য্য-বীর্য্যে
হইবে আপন হারা।
বাংলা হবে আমাদের
মায়ের মত মায়া,
স্নেহশীলা গরিয়সী
চলার পথের ছায়।
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হবে
বাংলাদেশের দাবিরে।
শান্তি সুধা স্নিদ্ধ বারি
মায়ের মত পাবিরে,
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হবে
বাংলাদেশের দাবিরে।
(চলবে——)