জীবনের ডায়েরী থেকে গল্প সমগ্র : পর্ব-০৫

[ ড. টি. এন. রশীদ ]

(গত পর্বের পর) : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীন বাংলার প্রেক্ষাপট : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি স্তম্ভ আমাদের শহীদ মিনার। আজ কোথায় সেই শহীদ মিনার ? দাঁড়িয়ে আছে শ্রদ্ধার স্তম্ভ। রাজনীতিবিদদের গায়ে ফুল ছড়ায়ে দেখায় তাদের স্তম্ভ। রাজনীতিবিদদের ছবি ঝুলিয়ে রাখে শহীদ মিনারের মাথায়। কোন রাজনীতিবিদ কার কত প্রিয়, ঝগড়া লড়াই করেছে কাথায় কথায়। তবুও যেন আজ কারে আমি হাতড়ে হাতড়ে বেড়াই, খুঁজি বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের, খুঁজি বরকত, ছালাম, জব্বার, রফিক, আমার সোনার বাংলার সোনার ছেলেদের।
এই দেশের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। জন্ম লগ্নে দেশকে দেখেছি। দেখতে চাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে পদে পদে আমি যেমন- বাঁধাগ্রস্ত হয়েছি, তেমনি সফলতা লাভ করেছি। আমাকে ১৯৪৮ সালে পিডব্লিউএনজি এর অফিসার ইনচার্জের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। ৩ বছর যথেষ্ট সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। পরে ১৯৫১ সালে ৫৭ ব্যাটেলিয়ান, রমনা ঢাকা থেকে ক্যাপ্টেন উপাধি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ছিল তখন পূর্ব পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা থাকলেও উভয় পাকিস্তানই শাসন করত পশ্চিম পাকিস্তান। শাসনের নামে তারা অন্যায্য ও অন্যায়ভাবে যুলুম করেছে তারা বাঙ্গালী জাতির উপর।
ফুটপাত থেকে অফিসার পাড়া, কোথায় নেই অরাজকতা ? সর্ব ক্ষেত্রেই অবহেলিত ছিল বাঙ্গালী জাতি। সে সময়ই ১৯৪৮ সালের ২১ শে মার্চ রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান জাতির পিতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাত পূর্ব বাংলার জনতার উদ্দেশ্যে এক ভাষন দেন। তিনি তার ভাষনে বলেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র ভাষা। এ কথা শোনা রপর নবগঠিত পাকিস্তান জাতির পিতা যিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে, তার বিরুদ্ধে ঢাকার মানুষ বিক্ষুব্ধদ্ধ হয়ে ওঠে। ছাত্র সমাজ বলে ওঠে না-না-না। আমরা বাঙ্গালী তাই আমাদের রাষ্ট্র ভাষাও হবে বাংলা। উর্দুকে কোন মতেই মেনে নেওয়া যাবে না।

(চলবে——)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।