জীবনের ডায়েরী থেকে গল্প সমগ্র : পর্ব-০৪

[ ড. টি. এন রশীদ (কবিরত্ন) ]
(গত পর্বের পর) : আমার সারাটা জীবন কেটেছে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে করতে। নিজের জন্য সময় দিয়েছি খুব কম। ভেবেছিলাম নিজ দেশে এর মূল্যায়ন হবে, কিন্তু আশানুরুপভাবে তা হয়নি। বরং অন্য রাষ্ট্র আমেরিকাতেই শেষ পর্যন্ত আমার মূল্যায়ন হল। ২০০৬ সালের ৭ই মে সেখানকার “সিয়েনা হাইট ইউনিভার্সিটি” থেকে আমাকে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী দেয়া হয়েছে। মানবতার জন্য আমাকে এত বড় সম্মান দেয়া হল। এই সম্মান আমাকে অর্জন করতে হয়েছে ৬৪ বছল সাধনার পর। আমার জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন সবচেয়ে বড় স্মরণীয় মুহূর্ত এটিই। এই আনন্দ, এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের নয়।
যদি অবসরের কথা কেউ জিজ্ঞাসা করে তো উত্তরে তাদের হতাশই হতে হয়। কারণ অবসর কী তা আমার জীবনে আমি বুঝিনি। আসলে বোঝার সময় পাইনি। কারণ সারাটা জীবনই কেটে গেল এক সমস্যা থেকে অন্য সমস্যার সমাধান খুঁজতে খুঁজতে। দুঃখী, মানুষগুলোর মুখে একটু হাঁসি ফোটাতে কখন যে জীবনের অবসর সময়গুলো হারিয়ে ফেলেছি তা নিজেই জানি না। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও আমি কাজ করে চলছি। হয়তো পরিমাণে একটু কম, কিন্তু থেমে নেই একটুও। মাঝে মাঝে ভাবি কবরের কর্মহীন দিনগুলোই বোধহয় মানুষের বড় একটা অবসর সময়।
শেষ বেলায় এতটুকুই বলব, কোন জীবনই অমর নয়। সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। কিন্তু মৃত্যুর পরও মানুষ তাদের স্মরণ রাখে। যারা নিজেদের জীবন মানুষের সেবাউ উৎসর্গ করে। আমি জানি না আমার কাজে এমন কিছু ছিল কি না, যা মৃত্যুর পরও মানুষের মনে আমাকে জাগ্রত রাখবে। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি। আর যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন চেষ্টা করে যাব মানুষের সেবা করতে, কারণ সবার উপড়ে মানুষ।
(চলবে——-)