কন্যা সন্তান নিয়ে থাকছেন অন্যের ঘরে
ভোলায় সরকারী ঘর পরিত্যক্ত থাকলেও মিলছেনা অসহায় ফেরদৌসে’র

ইয়ামিন হোসেন ॥ স্বামী সোরহাব মৃত্যুবরণ করেছে অনেক আগেই। রেখে গেছেন সুমাইয়া নামের এক কন্যা সন্তান। সন্তানকে বুকে নিয়ে বাঁচতে চেষ্টায় দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়ননি ফেরদৌস বেগম। নিজে কঠিন রোগে আক্রান্ত থাকলেও চিকিৎসা না করিয়ে সুমাইয়াকে পড়াশোনা করাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে ফেরি করে। সেই একমাত্র সুমাইয়া এ বছর চর ইলিশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে মা-মেয়ে জীবন কাটালেও মাথা গোঁজানোর একটু ঠাঁই নেই। রাক্ষসী মেঘনায় বাবার কূল, শ্বশুর কূল সব গর্ভে নিয়ে গেছে। সর্বত্র হারিয়ে দিশেহারা ফেরদৌস বেগম। বলছি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ১নং ওয়ার্ডের চর আনন্দ পার্ট-১ এর গ্রামের সরকারী আশ্রায়ণ প্রকল্পের অন্যর ঘরে থাকা ফেরদৌস বেগম এর কথা।
সম্প্রতি সরজমিন ওই আশ্রায়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ভিতরে প্রবেশের দুইপাশে ঘরগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কোন কোন ঘর তৈরির পর একবারও তালা খুলেনি বলেও জানা যায়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্বজনপ্রীতি করে স্বাবলম্বী মানুষের নামে গরীবের ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ায় তারা অনেকেই আসেনি। কেউ বা আবার বিক্রি করে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এদিকে সারি সারি ঘর খালি থাকলেও মাথা গোঁজানোর ঠাঁই হচ্ছে না বিধবা ফেরদৌস ও তার কন্যা সুমাইয়ার। ওই আশ্রায়ণ প্রকল্পেই অন্যের ঘরে অস্থায়ী বসবাস করছেন। যে কোন মুহূর্তে তাদের বের করে দিতে পারেন এমন আতঙ্কে থাকেন দুই মা-মেয়ে।
ফেরদৌস বেগম বলেন, আমি যে ঘরে থাকি, তারাও গরীব মানুষ। তারা কয়েক মাসের জন্য থাকতে দিয়েছে আমাদের। আবার চলে আসলে বের হয়ে যেতে হবে। আমাদের সামনে অনেক ঘর পরিত্যক্ত সেখানে কেউ কখনোই থাকেনি, আর তারা আসবে কিনা তার নিশ্চয়তা নেই। তাদের সবার বাড়ী-ঘর আছে। সেখান থেকে একটা ঘর দিলে আমি আমার মেয়েটাকে নিয়ে থাকতে পারতাম।
সুমাইয়া বেগম বলেন, আমার মা ছাড়া আপন কেউ নেই। মাও অসুস্থ্য। থাকার কোন স্থান নেই। আমাদেরকে যদি স্থায়ী একটি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করলে অনেক উপকার হতো। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী যে ঘরগুলো পরিত্যক্ত সে সব ঘরে ফেরদৌসদের মত অসহায়দের উঠিয়ে দিলে এ মানুষরা উপকৃত হতো। এ বিষয়ে ভোলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল।