গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা

এনজিও বিষয়ক প্রতিনিধি ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অধীনস্থ সকল বিভাগ, শাখা, দপ্তর ও আঞ্চলিক কার্যালয়কে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে আদেশ জারি করা হয়। রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন সভাকক্ষে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পূয়র-ড্ররপ-এর সহযোগিতায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে ধূমপানমুক্তকরণ ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণে অনুষ্ঠিত সেমিনারে এই অফিস আদেশ জারি করা হয়। এ আদেশ জারি করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী আবদুল লতিফ খান (যুগ্ম সচিব)।
এছাড়াও সেমিনারে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণে আগামী অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দের বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। অবিলম্বে এই আদেশ কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করে সেমিনারের প্রধান অতিথি আবদুল লতিফ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন অফিসসহ সমগ্র গাজীপুরকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করতে চান বলে আশা ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথি গাজীপুর সিভিল সার্জন ডা: মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, যারা বয়সে তরুণ, তারা যাতে কোনভাবেই নতুন করে ধূমপান শুরু করতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। ধূমপানের বিষয়ে তাদেরকে অনুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়াতে (যেমন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক, সোশাল) ধূমপানের বিরুদ্ধে আমাদেরকে আওয়াজ তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্ররপ-তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম কো অরডিনেটর রুবিনা ইসলাম। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে তার এই জনবান্ধব উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তামাকপণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রুবেল মাহমুদ, সচিব (ভারপ্রাপ্ত), গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন।
এছাড়াও সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকি, তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রস্তাবিত সংশোধনী আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন তারা। উল্লেখ্য, ড্ররপ বিগত ১৯৮৭ সাল থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর সাথে জড়িত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রবর্তনকারী সংস্থা হিসাবে সমধিক পরিচিত। এরই ধারাবাহিকতায় ড্ররপ বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ এবং তামাক কর ও মূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে কাজ করছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।