সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন
দেড় যুগ পর আগামীকাল ভোলায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ

মাহে আলম মাহী ৷৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেড় যুগ পর ভোলা জেলায় কর্মী সমাবেশের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে ভোলা জেলায় জামায়াতে ইসলামীর সর্বশেষ বৃহৎ কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে এই দীর্ঘ বিরতির পর আবারও দলটি তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ভোলায় এমন একটি সমাবেশ আয়োজন করছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভোলা জেলা শাখার উদ্যোগে আগামীকাল শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী ভোলা জেলা শাখার আমীর, ভোলা ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জাকির হোসাইন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এম. পি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক এ্যাড. মুহাম্মদ মুয়াযযম হোসাইন (হেলাল), কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগরী আমীর অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও বরিশাল অঞ্চল টিম সদস্য এ. কে. এম ফখরুদ্দিন খান রাযী।
জামায়াতে ইসলামীর ভোলা জেলার শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, এই কর্মী সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ঐক্য বজায় রাখা, সংগঠনের কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা। এছাড়া, সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে, যারা ভোলার জামায়াত কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন।
সমাবেশে দলের নেতৃবৃন্দ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, বিশেষ করে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জামায়াতে ইসলামীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, এবং দলের আদর্শ ও মূলনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশের মাধ্যমে দলের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনঃনির্ধারণ করবেন।
এদিকে ভোলা জেলায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সমাবেশের স্থানসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকল ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু রাখতে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এই কর্মী সমাবেশের মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন যে, জামায়াতে ইসলামী কি পুনরায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে? বিশেষ করে গত কয়েক বছরে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং এর মধ্যে জামায়াতের এই কর্মী সমাবেশ বিশেষভাবে নজরকাড়া। যদিও দলটি অতীতে বেশ কিছু বিতর্কিত অবস্থানে ছিল, তবে এবার তারা আবারও নিজেদের রাজনৈতিক ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোলা জেলায় জামায়াতে ইসলামী একসময় রাজনৈতিক কার্যক্রমের জন্য বেশ পরিচিত ছিল। তারা স্থানীয় নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করেও স্থানীয় জনগণের মাঝে প্রভাব বিস্তার করেছে। যদিও বিগত বছরগুলোতে জামায়াতের রাজনৈতিক কার্যক্রম অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছিল, তবে এবার তারা নিজেদের পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
এ দীর্ঘ বিরতির পর জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমাবেশ ভোলায় অনুষ্ঠিত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনা। দলের নেতা-কর্মীরা মনে করেন, এই সমাবেশ তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে এবং আগামী দিনের জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। তবে, এই কর্মী সমাবেশের পর কী ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভোলা সদর উপজেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। মতবিনিময় সভায় জামায়াতের জেলা ও উপজেলা নেতারা ২৫ জানুয়ারির কর্মী সমাবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এসময় জামায়াত নেতারা বলেন ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘ দেড় যুগ পর শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জামায়াতে ইসলামী ভোলা জেলার কর্মী সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সমাবেশ স্মরণকালের সেরা সমাবেশ হবে বলেও জানিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরা।