উকিল হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না ইমরানের, জানাজায় মানুষের ঢল
ইয়ামিন হোসেন ॥ বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত ইমরান হোসেনের আইনজীবী (উকিল) হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না। গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বরিশাল ল-কলেজে এলএলবি (১ম বর্ষের) পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রওয়ানা দেন তিনি। আইনের পরীক্ষা দিতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ইমরান। গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশালের কীর্তনখোলা ও কালাবদর নদীর মোহনায় স্পিডবোট ও বাল্কহেডের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হয় এবং ইমরান হোসেনসহ ৩ যাত্রী নিখোঁজ হয়। অবশেষে রবিবার দুপুরে ওই ৩ জনের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ নিয়ে এই দুর্ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হলো। ইমরান ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের শাহাবুদ্দিন মিয়ার ছেলে এবং দৌলতখান ভুমি অফিসে কর্মরর ছিলেন।
অন্যরা হলেন স্পিডবোট চালক আল আমিন (২৩), ও মো. রাসেল আমিন (২৪)। চালক আল আমিন ভোলা সদরের চর ভেদুরিয়া এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে এবং রাসেল আমিন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিওপাড়া এলাকার আজগর আলী হাওলাদারের ছেলে।
এ ছাড়া দুর্ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জালিস মাহমুদ (৫০) নামে এক যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। তিনি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা জালিস হোসেন স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানিতে ভোলার বিক্রয় প্রতিনিধি (এসআর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বরিশাল সদর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, রবিবার দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থান থেকেই মরদেহ ৩টি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। পরে ৩টি মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে ইমরানের মরদেহ গ্রামের বাড়ী ধনিয়াতে পৌঁছলে স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এবং শুভাকাঙ্খীদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে যায়। ইমরানের ফুটফুটে দুই বাচ্চার দিকে তাকিয়ে বার বার মুর্ছা যায় তার গর্ভধারিণী মা। রবিবার এশার নামাজ শেষে ধনিয়া গোডাউন মাঠে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।