ভোলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন নবীন
ভোলায় শিমের বাম্পার ফলন
ইমরান হোসাইন/ইয়ামিন হোসেন ॥ ভোলায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া বিগত বছরের তুলনায় শিমের বাজার দর ভালো থাকায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এসব শিম জেলার বাজার ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে বাইরের জেলাগুলোতে। এতে একদিকে শিম চাষে আগ্রহ বেড়েছে অন্যদিকে আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
শিম চাষিরা জানান, মাটি ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ মৌসূমে দ্বীপজেলা ভোলায় শিমের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে শিমের সমারোহ। ক্ষেত পরিচর্যা, শিম তোলা ও বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কিষাণিরা। হালকা কুয়াশা পড়লেও ফলনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানালেন তারা। ভোলা সদরের চরসামাইয়া, পশ্চিম ইলিশার মুন্সীর চর ও দক্ষিণ দিঘলদীর বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শিমের সমারোহ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সেখানে কয়েক শতাধিক চাষি শিমের আবাদ করছেন। ক্ষেত থেকে শিম তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
শিম চাষি মারফেজ বলেন, প্রতি বছরই তিনি শিমের চাষ করেন। এ বছর ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদ করেছেন, শিম বিক্রি করে ২ লাখ টাকা লাভ হবে বলে জানান। চাষি মাহমুদ বলেন, সোয়া একর জমিতে শিম চাষ করেছি, উৎপাদন খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার শিম বিক্রি হয়েছে, এখনও ২ লাখ টাকার শিম বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
শিম চাষি জব্বার লাহারী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর শিমের বাজার দাম অনেক ভালো, গত বছর এসময় কেজি প্রতি শিম বিক্রি হয়েছে ৬০/৬৫ টাকা কিন্তু এ মৌসুমের শুরুতেই দাম পাওয়া যাচ্ছে ১০০/১২০ টাকা। তাই অনেকেই বেশ খুশি। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে বেশি দামে শিম বিক্রি করতে পেরে খুশি তারা। এসব শিম চলে যাচ্ছে বাইরের জেলাগুলোতেও।
চরসামাইয়া গ্রামের গ্রামের মোশারেফ হোসেন জানান, এ গ্রামে অনেক বেশি শিম চাষ হয়, স্থানীয় অনেক চাষি শিমের আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তারা অনেকটা সচ্ছল হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় চাষিরা জানান, এখানকার শিম ভোলার বাজার ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায়। শিম চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদল করছেন চাষিরা। ফল ভালো হওয়ায় হেক্টর প্রতি ৫শ’ মণ করে শিম উৎপাদন হচ্ছে বলে জানালেন শিম চাষীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবির বলেন, ভোলায় সজ্জন পদ্ধতিতে শিমের আবাদ হওয়ায় ফলন অনেক ভালো, তাই দিন দিন শিম চাষে ঝুঁকে পড়ছেন এই অঞ্চলের চাষিরা। তিনি আরো বলেন, গত বছর ভোলায় শিমের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৩শ’ ৫০ হেক্টর। চলতি বছরে শিম আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬শ’ ৭৭ হেক্টর জমিতে।
তিনি আরো বলেন, গতবছরে শিম উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ৩শ’ মেট্রিক টন। অন্যদিকে এ বছরে সম্ভাবনা ৩০ হাজার ১শ’ ৮৬ মেট্রিক টন। তবে এ বছর সবচেয়ে বেশি শিম আবাদ হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলায়, সেখানে আবাদের পরিমাণ ১২৩৫ হেক্টর।