আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য নেই
চরফ্যাশনে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে অস্বস্থি
চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥ তেল, নুন, লাকড়ি আর আলু-পটল-সবজি সব কিছুরই দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুই। মন চাইলেও কোন কিছু ইচ্ছে মত কেনা যায় না। বাসা থেকে হিসেব করে বাজারে গেলেও বাজারে গিয়ে আর ঠিক থাকে না পণ্যে কেনার তালিকা। কাটছাট করতে হয় পণ্যের তালিকার পরিমাপ। পণ্যমূল্য কমার কোন লক্ষণও নেই। উপরন্তু সব কিছুর দাম বেড়েই চলেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় অতি সাধারণ তরকারি আলুর দাম বাড়ার সাথে সাথে সব সবজির দামই বৃদ্ধি পেয়েছে। লাল শাক, মুলার শাক, মুলা, লাউ, শীম, বরবটি, শশা, করলা বেগুনসহ সব সবজির দাম বেশি। চাউল, ডাল, তেল, লবণের দামও বেশি। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে অস্বস্থি চলছে জনজীবনে। কারণ আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য নেই। শ্রমজীবী কি চাকরিজীবী, কারো হিসেব মিলছে না মাস শেষে। মাস শেষে দেনার খাতায় লিখতে হয় টাকার অংক। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। যা কারো কাছে প্রকাশও করতে পারছেনা।
চরফ্যাশনের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলুর দাম ৬৫-৭০ টাকা। বরবটি ১০০টাকা, শিম ১২০ টাকা করলা ৭০ টাকা ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা পেঁপে ৪০-৫০ টাকা টমেটো ১৫০ টাকা। মাছ মুরগির দামও আকাশ চুম্বি। প্রতি তেলাপিয়া মাছ ২৫০ টাকা পাঙ্গাশ মাছ ২২০ টাকা সোনালি মুরগী প্রতি কেজি ৩০০-৩২০ টাকা। পিয়াজ ১২০-১৩০ রসুন ২২০-২৩০ টাকা। গরুর গোশত ৭৫০- ৮০০টাকা।
গতকাল সকালে বাজার দর বিষয়ে কথা হয় এক শ্রমজীজীর সাথে। তিনি বলেন, ১ কেজি পাঙ্গাশ বা তেলাপিয়া মাছের সাথে ১ কেজি আলু দিয়ে যদি ১ পদের খাবারের ম্যানু তৈরি করা হয় তা-ও প্রায় ৫০০ টাকার মত খরচ হয়। লবণ-মরিচ তেল নুন হলুদ মশলা সব মিলে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যদি একজন শ্রমিক যদি দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা ইনকাম করে তাতে যদি এক পদের ম্যানু (সালুন) তৈরিতে টাকা শেষ হয়ে যায়, তাহলে চাউলসহ অন্য জিনিসপথ্য কিনবে কী দিয়ে ? গরুর গোশত-তো বিলাসিতা।
একজন আধা সরকারি চাকুরিজীবীর পুরো মাসের বেতনে বাজার পনের দিনও চলে না। অধিকাংশ আধা-সরকারি চাকুরীজীবী দ্রব্যমূল্যের উধ্বগতির বাজারে প্রতি মাসে ধারদেনা করে চলতে হয়। বর্তমান বেতনে নিত্যপণ্য কোন রকম কেনা গেলেও সন্তানের পড়াশোনার খরচ আর ঔষধ পথ্য কেনার টাকা থাকে না।
যা,অস্বস্তি কর অবস্থা আমাদের জন্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক জানান, বেতন পাই ২০ হাজার টাকার কাছাকাছি। ৬ সদস্যের পরিবারে ঠিকমত সংসার চালানো যায় না। আমাদের মত প্রায় প্রতিটি পরিবারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের উধ্বগতির কারণে অস্বস্তিকর অবস্থা চলছে। কেননা পরিবারগুলো আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য করতে পারছে না। একজন শিক্ষক হয়ে ধারদেনা করে পরিবার চালাতে হয়, ভাবতে অবাক লাগে।