কথা কও
ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন)
কথাকও ১৯৮৪ (মন্ট্রিল) সেন্ট লরেন্স নদীকে দেখে
হে নদী ! হে অনাদি ! হে অনন্ত অসীম বিচিত্র
কথা কও, কথা কও, কথা কও,
নিরব নির্বাক হয়ে কেন চেয়ে রও,
কথা কও।
কোন সীমাহীন পারে তুমি ধেয়ে ধেয়ে যাও,
চোখ দুটি ছল-ছল অশ্রুসিক্ত ম্লান মুখ,
বিষন্ন, বিরহ, যাতনা ভরা তোমার বুক।
বিরাট ঐশ্বর্য্যরে মাঝে থেকেও
তুমি কত চুপচাপ,
মনিমুক্তো, পান্না জহরত,
পেয়েও করনা আলাপ ?
হে-দ্বীনান্বিতা, এত আলোকসজ্জা, আলোর মালা
আলোর দীপালী, তোমারে ঘিরিয়া হাসে,
দূর আকাশের গায়ে
পূর্ণিমার চাঁদ ভাসে।
তবু কেন তুমি এত নিরব নিঝুম নিস্তব্ধ,
হে মনোমোহিনী, হে অপরূপ
হে-সুন্দরী, কিন্নরী, গরবিনী, মনোমোহিনী,
আছ কেন চুপ ?
কেন প্রেয়সীর বিরহে তোমার মন
এত আনমনা হয়ে থাকে,
আমার মনে হয় গ্রীসের নীল সমুদ্রের মাঝে,
আমি দেখেছি তাকে।
আমি দেখেছি, রোমে, এথেন্সে, প্যারিসে, লন্ডনে
নীল স্বপ্নঘেরা সাগরের পাড়ে,
সবুজ সাগর তোমায়
ডাকছে বারে বারে।
তুমি যাও, তুমি যাও আটলান্টিকের মাঝে পড়ে,
প্রশান্ত মহাসাগরে যাবে,
উদ্দাম, উত্তাল, তরঙ্গের মাঝে
তুমি তাকে খুঁজে পাবে।
তুমি নিঝুম ঘুম ঘুম ভাব করে তখন থেকনা
ক্লান্ত হয়ে যেন যেওনা,
যেতে যেতে পিছে ফিরে চেওনা,
ভয় পেয়ে যেন ফিরে এসনা।
হে নদী ! হে অনাদি ! হে অনন্ত, হে অসীম, হে বিচিত্র
কথা কও, কথা কও, কথা কও,
নিরব নির্বাক হয়ে কেন চেয়ে রও,
কথা কও।