ভোলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন নবীন
মনপুরায় ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিন চাইল্ড সেফটি ডিভাইসসহ একাধিক উদ্ভাবন
পানিতে ডুবে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে শিশুরা
স্টাফ রিপোর্টার, মনপুরা ॥ দেশে প্রতিনিয়ত পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করছে একের পর এক শিশু। প্রতিবছরই এই মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হয়। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে এক অভাবনীয় ডিভাইস আবিস্কার করলো ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার তাহসিন নামে এক ক্ষুদে বিজ্ঞানী। তিনি ডিভাইসটির নাম দিয়েছে ‘চাইল্ড সেফটি ডিভাইস’। ডিভাইসটির ওজন মাত্র ৫০ গ্রাম। যে শিশুটি এই ডিভাইস ব্যবহার করবে সেই শিশুটি পানিতে ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে অভিভাবকের মোবইলে কল চলে যাবে এবং সাথে সাথে বাসায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলার্ম বাজতে থাকবে। এমনকি শিশুটি কোথায় আছে তাও জানা যাবে ওই ডিভাইসটির মাধ্যমে। এতে পুকুরের পানিতে পড়ে গেলেও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে ডিভাইস ব্যবহারকারী শিশু। এইভাবে দেশে কমে আসতে পারে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর হার।
এছাড়াও তাহসিন আবিস্কার করেছেন, লাইফ সেফটি ডিভাইস। এই ডিভাইস ব্যবহারকারীর উপর কেউ হামলা করলে হামলাকারী ২৫০ থেকে ৩৫০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক পাবে। এর পাশাপাশি ক্ষুদে বিজ্ঞানী কৃষকের জন্য আবিস্কার করেছেন ফার্মার সেফটি মেশিন। এই মেশিনটি ব্যবহার করলে কৃষক রোদ এবং বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবেন। তীব্র গরমে দিবে বাতাস। এছাড়াও কৃষকের জন্য আরেকটি ফার্মার হেল্পার মেশিন আবিস্কার করেছেন। এই মেশিনটি দিয়ে কৃষকরা জমিতে পরিমান মতো সার প্রয়োগ করতে পারবে। এছাড়াও মেশিনটি পাঁচজন কৃষকের কাজ একাই করতে পারে। মেশিনটি পরিবেশ বান্ধব। অন্যদিকে এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী একে একে আবিস্কার করেছেন, ফার্মার এসিট্যান্ট মেশিন, র্স্টাট থিপ টব সিকিউরিটি, স্মার্ট হর্ণ, স্মার্ট ডাস্টবিন, স্মার্ট ওয়াটার টেপ, ডোজ এলার্ম গ্লাস, স্মার্ট বৈদ্যুতিক টেস্টার,স্মার্ট পিশ স্টেবিলাইজার ও অটোমেটিক কার্টেইন অফেনার।
মোঃ তাহসিন ঢাকা মটরস ইনস্টিটিউট অব টেকনলোজি এর ইলেকক্ট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার বাবা আবদুল হালিম মনপুরা উপজেলার ২ নং হাজিরহাট ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে চৌধুরী বাজার সংলগ্ন সোনারচর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মনপুরা ফাজিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক। ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিন জানান, তাদের পরিবার সচ্চল নয়। বাবা-মা খাবারের জন্য বা কোন কিছু কিনার জন্য যেই টাকা দিতেন তা থেকে জমিয়ে এই মেশিনগুলো আবিস্কার করেছেন। এই মেশিনগুলো আবিস্কার করতে তার খরচ হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
তাহসিনের বাবা আবদুল হালিম জানান, ছোটবেলা থেকে কিছু না কিছু করার চেষ্ঠা করতেন তাহসিন। আমাদের সামর্থ অনুযায়ী তাকে সহযোগিতা করেছি। প্রশাসন বা সরকারের সহযোগিতার আহবান জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিনকে সহযোগিতা করা হবে। তার উদ্ভাবনী ডিভাইসগুলো প্রশংসনীয়। এছাড়াও ইউএন ও তার সাফল্য কামনা করেন।