অবশেষে পাওয়া গেছে আলোচিত সেই ‘আয়নাঘর’ ॥ অভিযোগ পড়েছে ৪শ’টি

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করে ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গুম-সংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) গুম-সংক্রান্ত কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এরই মধ্যে বিভিন্ন আয়নাঘরে নানা পরিবর্তনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মুছে ফেলা হয়েছে। অনেক দেয়ালে রঙ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কক্ষ ভেঙে ফেলারও প্রমাণ মিলেছে। তবে কোনো ভুক্তভোগীকে পাওয়া যায়নি।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক যারা গুম হয়েছেন তাদের অভিযোগগুলো নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদেরও আমরা ডাকব। বক্তব্যের জন্য সমন দেব। অভিযুক্তরা না আসলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি গুমের অভিযোগ এসেছে র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি ও সিটিটিসির বিরুদ্ধে। ২৫ সেপ্টেম্বর আমরা ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। ১ অক্টোবর আমরা ডিবি ও সিটিটিসি পরিদর্শন করেছি। তবে সেখানে কোনো বন্দী আমরা পাইনি। সম্ভবত ৫ আগস্টের পর সেখানে থেকে সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা জানান, তারা লিখিতভাবে আয়নাঘরে সব ধরনের পরিবর্তন স্থগিত করার জন্য বলেছেন। অভিযুক্তদের তলব করে বিষয়টি ব্যাপকভাবে খতিয়ে দেখা হবে। গুমে অভিযুক্ত যেসব ব্যক্তি পালিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন জানান, গুম-সংক্রান্ত যে বর্ণনাগুলো তারা পেয়েছেন, সেই অনুযায়ী এখন সেলগুলো অনেকাংশে নেই। বেশ কিছু জিনিস পরিবর্তন করা হয়েছে, কিছু ভেঙে ফেলা হয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, মাত্র ১৩ কার্যদিনে ৪০০টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কাছে। এগুলোর বেশির ভাগই র্যাবের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ডিবি, সিটিটিসি, ডিজিএফআই; এসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধেও গুমের অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে ২৭ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে এই কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্টগার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্যের হাতে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।