মিথ্যা অভিযোগ ও অপ-প্রচারের প্রতিবাদে দৌলতখানে সংবাদ সম্মেলন
সাঁকোই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম
লালমোহনে শত বছর ধরে ব্রিজের জন্য অপেক্ষা !

স্টাফ রিপোর্টার, লালমোহন ॥ ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাজিরাবাদ এবং ১নং ওয়ার্ডের বগিরচর এলাকার দেবিরচর খালের ওপর প্রায় একশত বছর আগে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে যাতায়াতের সুবিধার্থে স্থানীয়রা সাঁকোতে বাঁশ আর সুপারি গাছ দিয়ে পারাপারের উপযোগী করে রেখেছেন। ওই সাঁকোর পূর্ব পাড়ে বরন্দি বাড়ি এবং পশ্চিম পাড়ে বেগের বাড়ি। সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন ওই এলাকার শতাধিক মানুষ পারাপার করেন। তবে রোদ-বৃষ্টিতে কয়েক মাস পর পর সাঁকোর বাঁশ আর সুপারি গাছ পচে গিয়ে নড়বড়ে হয়ে পড়ে। তখন আবার নতুন করে বাঁশ আর সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকোটিকে জোড়াতালি দেন স্থানীয়রা। তবে সাঁকোটি এ পর্যন্ত এলাকার হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম, আনসার মিয়া, আমেনা বেগম ও পারুল বেগম জানান, এই সাঁকোটি অন্তত একশত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের বাবা-দাদারাও এই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতেন। এখন আমরাও প্রয়োজনের তাগিদে এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করি। সাঁকোর পশ্চিম পাশের মানুষজন তাদের জমিতে চাষাবাদ করতে এবং আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে যেতে খাল পার হতে এই সাঁকোটি ব্যবহার করছেন। আবার এই সাঁকো ব্যবহার করে খালের পূর্ব পাড়ের মানুষজন স্থানীয় বাজার এবং চিকিৎসকের কাছে যান। সাঁকোটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব পাড়ের মানুষের জন্য। ওই পাড়ে বর্তমানে শতাধিক পরিবার বসবাস করেন। এই সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বহুবার বলা হয়েছে, তবুও ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।
অন্যদিকে স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও এই সাঁকো দিয়ে পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করেন। ওই এলাকার একটি মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির এমনই এক শিক্ষার্থী মো. তসলিম। সে জানায়, আমার মতো অনেকেই এই সাঁকো পার হয়ে স্কুল-মাদরাসায় যাওয়া-আসা করেন। বর্ষার সময় সাঁকোর বাঁশগুলো পিচ্ছিল হয়ে যায়। যার কারণে সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে অনেক ভয় হয় এবং খালের মধ্যে পড়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা খুবই জরুরি।
ঝান্টু জমাদার নামে বগিরচর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, গত বছর আমার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে এই সাঁকো পার হতে গিয়ে ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে যাই। ওই সময় আমার বৃদ্ধ মা আহত হন। অনেক সময়ই সাঁকোটি দিয়ে পার হতে গিয়ে বহু লোক খালের মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন। সাঁকোটির কারণে দুই পাড়ের শত শত মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে এইস্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
বদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদ উল্যাহ মেলকার জানান, সাঁকোটির কারণে ওই এলাকার কয়েক শত পরিবার বেশ কয়েক বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমি কয়েকবার কথাও বলেছি। ওই সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে এলজিইডির লালমোহন উপজেলা প্রকৌশলী রাজীব সাহা বলেন, আমি ওইস্থান পরিদর্শন করেছি। এরপর সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। ওই প্রস্তাবনাটি পাস হলে সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।