মাসিক মদীনা পত্রিকার সম্পাদককে নিয়ে স্মৃতিচারণ

একসময়ের জনপ্রিয় মাসিক মদীনা পত্রিকার সম্পাদক বাংলাদেশের একজন বরেণ্য আলেম মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রাহিমাহুল্লাহ্ এর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল (২৫ শে জুন)। ২০১৬ সালের এই দিনে ১৯ শে রমাদান ৮১ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
হুজুরের জীবদ্দশায় আমি তার সম্পাদিত মাসিক মদীনা পত্রিকার নিয়মিত গ্রাহক ও পাঠক ছিলাম। সেই সুবাদে কোন এক সুযোগে ১৯৯৯ সালে অন্তত চার বার আমি হুজুরের সাথে সাক্ষাত করার সৌভাগ্য লাভ করেছিলাম। তখন আমি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম। বরিশাল থেকে এসে সদরঘাটের কাছে বাংলাবাজার মদীনা পাবলিকেশান্স অফিসে হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করতাম। আমি একজন ডাক্তার এই পরিচয়ে প্রথম সাক্ষাৎ এ হুজুর আমাকে তাঁর পাশে একটি চেয়ারে বসালেন। এভাবে প্রতিবার সাক্ষাৎ এ হুজুর আমাকে তাঁর পাশে দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় দিয়ে কথা বলতেন এবং তার কাজ করতেন। আমি ইসলাম সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর জেনে নিতাম। আমি থাকাকালিন সে সময়ে যে সকল মানুষজন হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসতেন এবং যেসকল প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইতেন, সেগুলো আমারো জানা হয়ে যেত।
মদীনা পাবলিকেশান্স এর অনেক বইপত্র সেই সময়ে আমার কেনা হয়েছিল। পাশাপাশি হুজুর ও আমাকে অনেক বই এবং ইংরেজিতে কুরআন এর তাফসীর উপহার স্বরুপ দিয়েছিলেন। বিশেষ করে একটি অমূল্য রতœ উপহার পেয়েছিলাম যা ছিল সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী, এই দুই মসজিদের চেয়ারম্যান শায়েখ আব্দুর রহমান আস সুদাইস হুজুর এর কণ্ঠে পুরো পবিত্র কুরআন শরীফ তিলওয়াতের ক্যাসেট। আমি দেখলাম মুহিউদ্দীন খান হুজুর তার রুমে সর্বদা সুদাইস হুজুর এর তিলওয়াত এর ক্যাসেট মৃদু আওয়াজ এ চালিয়ে রাখতেন। আমি হুজুর কে অনুরোধ করলাম আমাকে এই ক্যাসেট এর একটি কপি দেওয়ার জন্য। হুজুর আমাকে ওয়াদা দিলেন পরে ব্যবস্থা করবেন ইনশা আল্লাহ তবে একটু দেরি হবে। পরে জানতে পারলাম হুজুর সৌদি আরব থেকে আরেকটি কপি আমার জন্য আনিয়ে দিয়েছিলেন।
হারামাইন শরীফ এর পরিচালনা কমিটি তে সারা বিশ্বের বরেণ্য আলেমদের কেউ কেউ স্থান পান। ঐ সময়ে মুহিউদ্দীন খান হুজুর ও ঐ কমিটির সদস্য ছিলেন। আজকের এই দিনে আমার জীবনের ২৫ বছর পূর্বের স্মৃতিচারণ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান হুজুর এর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার সামান্য চেষ্টা মাত্র।
মাওলানা মুহিউদ্দীন খান হুজুর এই দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং গোটা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে আজীবন নিবেদিত ছিলেন। মহান আল্লাহ হুজুরের এই খেদমতকে কবুল করুন। হুজুরের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদাউস এর আ’লা মাকাম দান করুন।

ডা: বদরুল আলম।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।