পচাত্তর বছরের আওয়ামীলীগ বটবৃক্ষ এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যত

বৃক্ষ যত বয়সি হয় তত এর শিকর ছড়ায় চারদিক। এমনও দেখাযায় যে, একটা প্রাসাদ পর্যন্ত গিলে ফেলে এই বটবৃক্ষ। বিশাল বটবৃক্ষ একদিকে যেমন নানান পাখিদের আশ্রয় দেয়, অন্যদিকে এতে বসবাস করেন বাদর সাপ, বিচ্ছু সহ বিভিন্ন প্রজাতির জীব। এর ছায়ায় গৃস্মে আশ্রয় নেন পথকাল্ত পথিক।
বিগত সংসদ নির্বাচন নানান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে নানান কারণেই প্রধানমন্ত্রী মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাকে এক অদ্ভুত অভিনব পদ্ধতির আশ্রয় নিতে বাধ্য করে। তৈরি হয় বিভেধ। কিন্তু যে কাজটি আওয়ামীলীগ বা শেখ হাসিনা অনায়াসে করতে পারতেন তাহলো দলের ত্যাগী সৎ আদর্শবান জ্ঞানী অভিজ্ঞতার আলোয় আলোকিত, অবিতর্কিত মানুষদের, মনোনয়ন দিয়ে, দলকে একাধিকবার নির্বাচিত বিতর্কিত আত্বীয়করনের দোষে, দুর্নীতির অভিযোগে, ক্ষমতার অপব্যবহারে অভিযুক্ত তাদের কবলথেকে দেশ এবং দলকে মুক্তকরা। ফলে যা হবার তাই হলো। নিজেদের অবস্থানকে আরও পাকাপোক্ত করার জন্য উপজেলার নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীর বিজয়ের জন্য জনগণের প্রত্যাশাকে ভুলুন্ঠিত করে, দলকে আরো বিতর্কিত আরো বিভক্ত করে ফেলেন।
দলের অপেক্ষাকৃত ভাল মানুষ এবং নিবেদিত ত্যাগের মহিমায় তৃণমূলে শ্রদ্ধার মানুষদের উপেক্ষা করে, এমপি সাহেবের আজ্ঞাবহ এবং টাকা রোজগারের হাতিয়ার হিসাবেই মেরুদ-হীন বিতর্কিত এমনই প্রার্থীর সমর্থনের অভিযোগ প্রকটভাবে আলোচিত। দলের বিভেদ বিভক্তি এখন চরম পর্যায়ে রুপ নিয়েছে। হামলা মামলা, পারস্পরিক সম্পর্ক শত্রুতায় পর্যবেশীত হয়েছে। এমপি সাহেবের নির্দেশ অমান্যের সাহসের কারণে ইতিমধ্যেই অনেক নেতা কর্মীদের লাঞ্ছিত অপমানিত হতে হয়েছে। অনেকে বাড়ির নিরাপদ আশ্রয় ফেলে এদিক ওদিক চলেও গেছেন।
২০০১ পরবর্তি বাংলাদেশ ! তখন ছিল ৪ দলীয় জোট সরকার। যার মাসুল তারা আজ পর্যন্ত দিয়ে চলছেন। ইতিহাস খুবই নির্মম, তা সবাই জানেন কিন্তু অহংকারে তা মানুষ দেখতে পায়না। ক্ষমতায় থাকা মানুষের চোখ অন্ধ হ্নদয় বন্ধ থাকে। তখন ভুলেও তাহারা ভাবতে পারেনা, যে- একদিন তাহারা আবার বিরোধি শিবিরে বসতে হতে পাড়ে ? চারদিকে অহর্নিশ চামচা চাটুকারের ভীর তাদের কিছু দেখতে দেয়না, ভাবতে দেয়না। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বচনে এই দলীয় সহিংসতা আত্মকলহ, আত্বহননে রুপ নেবে এ আমি দিব্য চোখে দেখতে পারছি। আর মর্ম যাতনায় নীল হচ্ছি!
জ্ঞান হবার পরথেকেএই দলের প্রতি আস্থা ভালবাসায় অবিচল থাকতে দেখেছি যাদের, তাদের অনেক কেই দেখছি মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে, আওয়ামীলীগকে বধ করতে বাইরের শত্রুর দরকার হবে না। নিজেদের আত্বকলহে নিজেরাই ধ্বংস হবে। আমাদের বিবেকহীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব, তাদের লোভ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উদগ্র লালসা আমাদের ধ্বংসের পথে ঠেলেদিচ্ছে। তাদের লোভ ও ক্ষমতার আকাঙ্খার পথ ধরে সমাজে এক নতুন সন্ত্রাসি অশুভ নেতৃত্বের প্রবল আস্ফালন চলছে। শিক্ষা, রুচি, নৈতিকতা, মানবিকতা বিবর্জিত এই শ্রেনির নেতৃত্ব, আমাদের দেশ ও সমাজকে কোথায় নিয়েযাবে আমরা তা জানিনা?
এদের হাতে কেউ নিরাপদ নয়, নিরাপদ নয় সমাজ ও রাষ্ট্র। অতি সম্প্রতি এমপি আনার হত্যার সাথে, দলীয় নেতৃত্বের সংযোগ লক্ষ্যনীয়। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য আমরা কি রেখে যেতে পারব, জানিনা। তাদের প্রতি দায়বদ্ধতার কারনেই আজ আমাদের বিবেকবান নেতৃত্বের ঐক্যের প্রয়োজন। এই লোভী দুর্নীতি পরায়ন সমাজ ধ্বংষকারি ক্ষমতান্ধ লোকদের রুখে দাড়ানোর এখনই সময়। নাহয় আমাদের প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবেনা।

মাহাবুবুল আলম নিরব মোল্লা
বীরমুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।