সর্বশেষঃ

মধ্যরাত : পর্ব-২৫৯

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : টেবিলের উপর ছোট্ট কাঁচের গ্লাসে জল ঢাকা রয়েছে। এক নিমিষে জলটুকু ঢক ঢক করে খেয়ে আমি সাদা চারদরটা গায়ে মেলে দিয়ে শুয়ে পরলাম। ঘুমত আমার কোন কালেই আসেনা। এতকালে যে ঘুম না গিয়ে আমি কি করে বেঁচে আছি, আমি নিজেই ভেবে ভেবে আশ্চর্য্য হয়ে যাই, তবুওত আমি বেঁচে আছি। হয়তঃ আরও অনেক দিন বাঁচব। সাদা বিড়ালটা মিউ মিউ করে আমার ঘরের জানালা দিয়ে আমার বিছানার কাছে এসে দাঁড়াল। দুটু জ্বল জ্বল চোখ তুলে অনেকক্ষণ আমার পানে তাকিয়ে থাকল। আমার আবার কোন কালেই এসব বিড়াল-কুকুর এদের আদর-সোহাগ করার অভ্যাস নেই, তবু যেন এত সুন্দর সাদা ধবধবে নরম তুল তুলে বিড়ালটাকে দেখে আমার খুব ভাল লাগল। কতক্ষণ ধরে চেয়ে থাকলাম তা মনে নেই। তবে বিড়ালটা ঘরের এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে মিউ মিউ করে চেয়ে চেয়ে চলে গেল।
আমি চোখ বুজে থাকলাম, এপাশ-ওপাশ করলাম। মাথাটা খুব ব্যথা করছিল, প্রেসারটা আবার বাড়ল নাকি ? অনেক দিন হয় প্রেসারটা চেকও করিনি। আমার নিজের জন্য আমি চিন্তা করিনা, এখন দোলার কথা ভাবতে হয়, মা-বাবা বিহীন এই বিদেশে আমার উপর নির্ভর করে বড়দি পাঠিয়েছিল পড়াশুনো করতে। বিধির লিখন টরেন্টোয় সুশান্তর ওখানে সুশান্তর বন্ধু কচ এর বড় ভাইর ওখানে কুসুমের বিয়ের নিমন্ত্রণে গিয়ে কচ-দোলার মন দেয়া-নেয়া হয়। তারপর কচই মন্ট্রিল পর্যন্ত ধাওয়া করেছে, আমার কাছে দোলাকে পাবার জন্য। কচ এর চেহারা স্বাস্থ্যে রূপ-লাবন্যে ইউনিভার্সিটির বড় ডিগ্রী আমাকে মুগ্ধ করেছে। আরও বিস্মিত হয়েছি ওর গীটারের বাজনা শুনে। এত গুন দিয়ে ও আমার কাছ থেকে হরণ করেছে দোলাকে। এত শীঘ্র শীঘ্র বাচ্চা হচ্ছে, আমার মোটেই ইচ্ছে ছিল না। দোলার পড়াশুনোর অনেক ক্ষতি হল। এম.এসটা দিতে পারল না। বাচ্চা হলে পর বাচ্চা উমার কাছে রেখে পড়াশুনো করতে বলবো। এসব জল্পনা-কল্পনা করতে করতে আমার যেন একটু তন্দ্রা এল। অনেক রাত হল এর মধ্যে দুইবার এসে উমা তাগাদা দিয়ে গেল, একি দাদা আপনি রাত জাগছেন কেন ? প্রেসার বেরে যাবে। ওর ভয়ে তাড়াতাড়ি চোখ বুঝলাম। উমা আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে এসে ড্রইং রুমের আলো নিভিয়ে দিয়ে গেল।

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।