সর্বশেষঃ

তীব্র গরমে লালমোহনে প্রতিদিন বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী

স্টাফ রিপোর্টার, লালমোহন ॥ তীব্র গরমে ভোলার লালমোহন উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ১০ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন দেড় শতাধিক রোগী। বর্তমানে দৈনিক লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন শিশু ও বয়স্ক ১৫ থেকে ২০জন করে রোগী। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সংখ্যা বাড়ায় মেজেতেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু সন্তান ওমরকে নিয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন মোসা. সখিনা বিবি। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে আমার ছেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। প্রথম কয়েকদিন বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করিয়েছি। ওই চিকিৎসায় ছেলের শারীরিক কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে শনিবার সকালে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছি। এখন তার চিকিৎসা চলছে। উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের চরটিটিয়া গ্রাম থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী মো. বশির। তিনি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে বমি ও পেট ব্যথা ছিল। শনিবার সকালে ডায়রিয়ার মল যেতে শুরু করে। এরপর সকালেই লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ভর্তি হয়েছি। এখান থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে লালমোহনে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। আমরা ধারণা করছি- আবহাওয়া পরিবর্তন ও অতিরিক্ত গরমের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা আসছেন। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করছি।
অন্যদিকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার মোসা. তাসলিমা বেগম বলেন, চিকিৎসকরা রোগীদের ভর্তি দেন। এরপর রোগীরা আমাদের কাছে আসেন। আমাদের সকল নার্সরা রোগীদের আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিচ্ছেন। আমরা চাই, আন্তরিক সেবার মাধ্যমে রোগীদের সুস্থ্য করে বাড়ি পাঠাতে।


এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, প্রতি বছরই গরমের সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এবছরও এপ্রিলের শুরু থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেখানে রয়েছেন শিশু থেকে বয়স্ক রোগী। যাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ তাদেরকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এসব ভর্তি রোগীদের বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, পারিবারিক সচেতনতাই পারে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে। এরইমধ্যে আমরা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঠ পর্যায়ে সচেতনতার জন্য কাজ করতে বলেছি। তারা নির্দেশনা অনুযায়ী ডায়রিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।