উৎসাহ ও সংকটে রয়েছেন ভোটারেরা

লালমোহনে ২১ বছর পর ইউপি নির্বাচন, ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা

জাহিদ দুলাল ॥ ২০০৩ সালে ভোলার লালমোহন উপজেলার ৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রায় ২১ বছর বন্ধ ছিল ইউনিয়নটির নির্বাচন। অবশেষে সব জটিলতা কাটিয়ে আগামী ৯ মার্চ তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী ৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলীয় প্রতীক না থাকায় ও দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হওয়ায় পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে বইছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে বিরামহীনভাবে ছুটে চলছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে যেন দম ফেলানোর সময় নেই প্রার্থীদের। গণসংযোগ, উঠান বৈঠক আর পথসভায় দিনপার করছেন প্রার্থীরা।
জানা যায়, লালমোহন উপজেলার ৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোট প্রার্থী ৮৩ জন। এরমধ্যে ৯টি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৫৮ জন প্রার্থী, সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ১৩ জন নারী প্রার্থী। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যানসহ ১২ জন নবীন-প্রবীণ প্রার্থী। আগামী ৯ মার্চ ইউনিয়নটির ১২ টি ভোট কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। ৭ নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩১ হাজার ২৭৭জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১৪ হাজার ৯৮৯জন এবং পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ২৮৮জন।
৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী শারমিন আক্তার বলেন, আমি নির্বাচিত হলে এই তিন ওয়ার্ডের নারীদের উন্নয়নে কাজ করবো। এ ছাড়া এলাকার মানুষদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করার চেষ্টা করবো।


৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শাকিল বলেন, আমি নির্বাচিত হলে এই ইউনিয়নের তরুণ-যুবকদের বেকারত্ব দূর করতে কাজ করবো। এ ছাড়া বর্তমানে এই ইউনিয়নে যে সকল অব্যবস্থাপনা রয়েছে তা দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
ওই ইউনিয়নের আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. খোকন পাটোয়ারী জানান, নির্বাচনে আমি জয়ী হতে পারলে এই ইউনিয়নের মানুষের সেবায় নিজেকে সব সময় নিয়োজিত রাখবো। সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দেবো।
৭নং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবু ইউসুফ বলেন, বিগত ২১ বছর ধরে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে চেষ্টা করেছি মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার। ইউনিয়নের উন্নয়নে নানা ধরনের কাজ করেছ। পুনরায় যদি ইউনিয়নের জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেন তাহলে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করে পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নকে আরো এগিয়ে নিবো।
শুধু এই তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীই নয়, অন্যান্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দিচ্ছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি। তারাও জয়ী হলে ইউনিয়নের উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গিকার করছেন।
অন্যদিকে ইউনিয়নের ভোটররা বলছেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর এই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতো বছর নির্বাচন না হওয়ায় ইউনিয়নটিতে থমকে পড়েছিল উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা। আমরা এখন এমন প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে চাই, যারা জনগণ ও এলাকার উন্নয়নে নিঃস্বার্থবানভাবে কাজ করবেন।
এদিকে এই ইউনিয়নের অনেক ভোটারগণ এখনো বিশ্বাসই করতে পারছেন না আগামী ৯ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাদের ধারণা আবারো ভোট বন্ধ হয়ে যাবে। তারা আরো জানায় ভোট বন্ধের জন্য একটিগ্রুপ আদালতে মামলা করেছেন।


এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউসুফ হারুন বলেন, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমরা পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নবাসীকে সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।