বঙ্গবন্ধু পরিবারকে আজীবন মূল্যায়ন করা উচিত, কারণ বঙ্গবন্ধুর জন্যই বাংলাদেশ

ভোলায় বঙ্গবন্ধু পরিবারকে অবমূল্যায়ন

এম রহমান রুবেল ॥ ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও প্রতিযোগিতায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার চরিত্রে অভিনয় করা কাউকেই মূল্যায়িত না করে অন্য ক্যাটাগড়িতে অভিনয়কারীদের পুরুস্কারকৃত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বঙ্গবন্ধু’র চরিত্রে ১ জন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে ৭ জন, শেখ রেহেনার চরিত্রে অভিনয়কারি ৩ জনের শিক্ষার্থীকে পুরুস্কার কিংবা শান্তনা পুরুস্কার না দিয়ে অন্যান্য ক্যাটাগড়িসহ উক্ত অনুষ্ঠানে শিক্ষক, সাংবাদিকসহ যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে পুরস্কৃত করে বিচারকের বিতর্কিত রায় ঘোষণা করায় ক্ষুদ্ধ উপস্থিত অভিভাবক, অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা। এ ঘটনায় ভোলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, অন্যান্য শিক্ষক ও সমাজের বিভিন্ন স্থরের মানুষের ভিতরে।
বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয়কারি শিক্ষার্থী মাহাজাবিন জারিয়ার বাবা এইচ এম জাকির বলেন, যদিও আমার একমাত্র কন্যা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মাহাজাবিন জারিয়া মুন বঙ্গবন্ধু সেজে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় এমনকি সান্তনা পুরস্কারও না পাওয়ায় আমি কেনো সেখানে উপস্থিত আমন্ত্রিত সকল অতিথিরাই হতবাক হয়েছেন। যদিও আমি বিষয়টি কাউকে বললে হয়তোবা তারা ভাবতে পারেন আমার মেয়ে পুরস্কার পায়নি বিধাই আমি বিষয়টি সকলকে জানাচ্ছি। কিন্তু না, আমার সবচাইতে অবাক লেগেছে এই ভেবে যে, শুধু আমার মেয়েই নয়; সেখানে আমার মেয়ে বঙ্গবন্ধু সাজের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনাও সেজেছেন আরো অনেকে। তাদের মধ্য কাউকেই মূল্যায়িত করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে খুবই হতবাক ও মর্মাহত হয়েছি। কেননা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিশুরা বঙ্গবন্ধু সেজে তার জ্বালাময়ী ভাষণ তুলে ধরেন। এতে বিচারকরা যদি তাদের বিচারে এ সকল প্রতিযোগীকে একেবারেই অবমূল্যায়িত করে, তাতে করে ক্রমশ শিশুদের মনোবল এ ক্ষেত্রে নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আমি মনে করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ বলেন, বিচার কার্যে থাকা বিচারকরা সঠিক বিচার না করে মনগড়া ও মুখের দিকে তাকিয়ে বিচার করেছেন বলেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতনমহলের বিতর মিশ্র প্রতিক্রয়ার সৃষ্টি দেখা দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ তাদের বিরুদ্ধে বিচার করছি।
এ ব্যাপারে ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি এডভোকেট নজরুল হক ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বিদ্যালয়টিকে কুক্ষিগত করার কারণে এই ধরনের স্পর্ধা পেয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভোলা জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা যাদের কারনে স্বাধীনতা পেয়েছে, দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপান্তরিত হয়েছে এবং যার কারণে আজ আমরা মাতৃভাষায় কথা বলতে পারছি এমন ব্যক্তিদের নিয়ে যেমন সাজে তেমন অভিনয় করা কাউকে মুল্যায়িত না করায় উক্ত বিচার কার্যে থাকা কমিটির নেতৃবৃন্দের উপর আমি ক্ষুদ্ধ ও বিব্রতকর হয়েছি।
ভোলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি আজিজুল ইসলাম বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধু কেই নয় তার পরিবারের সদস্যদেরকে আজীবন সম্মান করা উচিত কারন বঙ্গবন্ধুর কারণেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু পরিবার চরিত্রে অভিনয়কারি শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত ও শান্তনা পুরুস্কার না করায় বিচারকরা বঙ্গবন্ধু পরিবার চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থীদের পুরুস্কার না করে অন্যান্যদের পুরুস্কার করায় বঙ্গবন্ধু পরিবার কে অবমুল্যায়ন করা হয়েছে।
এ বিষয় ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, যেমন খুশি তেমন সাজো অভিনয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারের চরিত্রে অভিনয়কারি কোন শিক্ষার্থীকে পুরুস্কৃত না করায় আমি বিব্রত ও লজ্জিত। বিচারকরা তাদের এমন রায় ঘোষণা করায় আমি হতবাক। তখন ঐ রায় ঘোষণা করার পর আমার কিছুই করার ছিল না। বিচারকদের নাম জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এই ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠানের সম্মানে নাম না বলতে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে উক্ত ঘটনার জন্য ক্ষমা চান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।