ভোলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা ॥ নারীসহ আহত-৩, আটক-২

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কবির আহম্মেদ নামের এক ব্যবসায়ীর পরিবারের উপর হামলা, ঘর লুটপাট এর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাফর ও জামাল গংদের বিরুদ্ধে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ৩ টায় ধনিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফরাজী বাড়িতে এ হামলা ভাংচুর ও ঘর লুটপাট এর ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত হন মোসাঃ খাদিজা বেগম, নুর জাহান ও মোঃ মিজান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহতদের মধ্যে মোঃ মিজান এর অবস্থান আশঙ্কা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে রেফার করেন। এই ঘটনার মূল হোতা অভিযুক্ত জাফর, জামাল, রানু বেগম ও মোঃ জাকির গংদের বিরুদ্ধে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মোঃ কবির আহম্মেদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত জাফর ও জামাল গংদের সাথে কবির আহম্মেদ এর জমিজমা নিয়া দীর্ঘদিন বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। এ জমিজমার বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় ভাবে একাধিকবার সালিশ মিমাংসার চেষ্টা করিয়া ব্যার্থ হয় কবির আহম্মেদ। অভিযুক্ত জাফর ও জামাল গংরা স্থানীয় সালিশ মিমাংসা তোয়াক্কা না করে ভুক্তভোগী কবির আহম্মেদ এর বসত ঘরের সামনে উঠানে জামাল, জাফর, রানু বেগম ও জাকির বেআইনী জনতাবন্ধে দেশীয় দা, লোহার রড, লাঠী সোঠা নিয়া আসিয়া কবির আহম্মেদ এর পরিবারের সদস্যদের উপর এলোপাথারী মারধর শুরু করে। অভিযুক্ত জামাল এর হাতে থাকা ধারালো দাও দিয়া খাদিজা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপর কোপ মারিয়া মাথায় গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে। অভিযুক্ত জাফর এর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া খাদিজা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপর বারি দিলে উক্ত বারি তার দুই হাত দিয়া ঠেকানোর চেষ্টা করিলে তাহার বাম হাতের উপর পরিয়া হাড় ভাঙ্গিয়া যায়। তখন তারা ডাক চিৎকার করিলে নুর জাহান ও মিজান দৌড়াইয়া আসিলে জাফর এর হাতে থাকা লোহার রড দিয়া তাহাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার উপর বারি মারিয়া মাথায় গুরুতর ফাটা রক্তাক্ত জখম করে। অভিযুক্ত রানু বেগম ও জাকির লোহার রড ও লাঠি দিয়া এলোপাথারীভাবে পিটাইয়া আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে।
তাদের উপর হামলা চালিয়ে অভিযুক্ত জাফর ও জামাল নুর জাহান এর গলায় থাকা ১০ আনা ওজনের স্বর্নের চেইন মূল্য অনুমান ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা আহতদের বসত ঘরের মধ্যে অনধিকারে প্রবেশ করিয়া ঘরের আলমারি, সেলাই মেশিন ভাংচুরি করিয়া অনুমান ২৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। হামলায় জড়িতরা কবির আহম্মেদ এর আলমারির ডয়ায়েরের মধ্যে থাকা ব্যবসার অনুমান ১লাখ ৪৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারা আহত নারীদের কাপড় চোপড় টানিয়া ছিড়িয়া শ্লীলতাহানি করে বলে ও অভিযোগ করেন এজাহারে। গুরুতর আহত নুর জাহান বলেন, হাসনাইন ও ইউসুফ হলো এ সকল ঘটনার মূল হোতা। তার নির্দেশই সন্ত্রাসী জাফর ও জামাল গংরা পরপর দুই তিনবার আমাদের উপর এ ধরনের অতর্কিত হামলা চালায়।
অভিযুক্ত জাফর ও জামাল পুলিশের হাতে আটক হওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত জাকির এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ জমি নিয়ে আদালতে নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে। গাছের ছায়া অন্যের জমিতে পরার কারণে গাছ কাটার সময় তারা পুলিশ নিয়ে আসে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার পর উভয়পক্ষের ভিতর মারামারি হয়েছে। ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, উক্ত ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।