আনারস প্রতিকের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানালেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান
শখের গরুতে ভাগ্য বদলেছে লালমোহনের হানিফ শেখ’র
জাহিদ দুলাল ॥ ১৯৯৩ সাল। ওই বছর শখের বশে পালতে অস্ট্রেলিয়ান জাতের দুইটি গরু আনেন হাজী শেখ মোহাম্মদ হানিফ। এখন সেই দুই গরুতেই বদলে গেছে তার ভাগ্য। বর্তমানে হানিফ শেখের রয়েছে বিশাল গরুর খামার। যেখানে ছোট বড় মিলিয়ে এখন ৬৫টি গরু রয়েছে। ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গজারিয়া এলাকার নিজ বাড়ির আঙিনায় শেখ মোহাম্মদ হানিফের গরুর খামার।
এই গরুর খামারে শেখ মোহাম্মদ হানিফের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরার পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে আরো ৬ জনের। যারা খামারে কাজ করে চালাচ্ছেন নিজেদের সংসার। বর্তমান সময়ে গরুর খামারি ও লালন-পালনে আগ্রহীদের জন্য হানিফ শেখ হতে পারেন এক আদর্শ উদাহরণ।
শেখ মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান জাতের দুইটি গরু পালতে আনি। ২০০৪ সাল থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গরুর সংখ্যা। এখন আমার খামারে সব মিলিয়ে ৬৫টি গরু রয়েছে। যার মধ্যে ৩২টি পূর্ণ বয়স্ক গাভী। বাকিগুলো বকনা বাছুর। গাভীগুলোর মধ্যে বর্তমানে দুধ দিচ্ছে ১৪টি। দৈনিক দুইশত লিটার দুধ দিচ্ছে গাভীগুলো। যা বাজারে ৭০ টাকা লিটার ধরে বিক্রি করছি। এতে করে দৈনিক ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করতে পারি। বছর শেষে দুধ ও গরু বিক্রি হয় অন্তত ৭৫ লাখ টাকার।
তিনি আরো বলেন, এসব গরুর পিছনে শ্রমিক, খাবার, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসায় বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়। এসব ব্যয় বাদে বছরে অন্তত ২৫ লাখ টাকার মতো লাভ হয়। এই গরুর আয় থেকেই ৪ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আর পড়ালেখা করছে ছেলে। গরুর আয় থেকে বর্তমানে খুব সুন্দরভাবে আল্লাহর রহমতে সংসার চলছে। এছাড়া আমার এই গরুর খামারে এখন ৬জন শ্রমিক কাজ করেন। তাদেরকে প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা করে বেতন দিচ্ছি। যা দিয়ে তারাও খুব ভালো ভাবে সংসার চালাচ্ছেন। সবকিছুর জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
হাজী শেখ মোহাম্মদ হানিফের খামারের শ্রমিক মো. আব্দুল জলিল জানান, আমার চার সন্তান। যাদের মধ্যে দুইজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে। এছাড়া সংসারে রয়েছে মা এবং স্ত্রী। আমাদের খামারি হানিফ মিয়া প্রতিমাসে ১৮ হাজার টাকা করে বেতন দিচ্ছেন। মাস শেষে যথা সময়ে বেতন দিয়ে দেন তিনি। এতে করে আমরাও অনেক সুন্দরভাবে সংসার চালাতে পারছি।
এ বিষয়ে লালমোহনের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বিল্লাল উদ্দিন বলেন, শেখ হানিফ উপজেলার একজন সফল গরুর খামারি। যেকোনো সমস্যায় তিনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। আমরা তাকে সব সময় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছি। এ ধারা আমরা অব্যাহত রাখবো।