লালমোহনে টমেটোর ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি
জাহিদ দুলাল ॥ ভোলার লালমোহন উপজেলায় টমেটো চাষ করে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক মো. কামাল মিয়া। উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর ফুলবাগিচা এলাকায় ৪৮ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছেন তিনি। কৃষক কামাল মিয়া ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সিকদার বাড়ির বাসিন্দা।
টমেটো চাষি কামাল মিয়া বলেন, ২০ বছর ধরে কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। মৌসুম অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করে আসছি। তবে গত কয়েক বছর আগে ওমান যাই। সেখানে গিয়ে টমেটোর ভালো ফলন দেখতে পাই। পরে দেশে ফিরে কয়েক বছর পর নিজেই টমেটো চাষ শুরু করি। এ বছর জমি বর্গা নিয়ে ৪৮ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি।
তিনি বলেন, গত চার মাস আগে কৃষি অফিসের পরামর্শে তাদের দেওয়া বিনামূল্যের বীজ ও সার দিয়ে এই টমেটো চাষ শুরু করি। টমেটো গাছের চারা লাগানোর চার মাসের মাথায় ফলন এসেছে। প্রতিটি গাছেই এখন থোঁকায় থোঁকায় ধরে রয়েছে টমেটো। ফলন অনেক ভালো। এরই মধ্যে দুইদিন বিক্রি করেছি। বাজারে এখন টমেটোর অনেক চাহিদা। আড়তে প্রতি কেজি টমেটোর দাম ৫০ টাকা করে পাচ্ছি। এছাড়া খুচরা প্রতি কেজি টমেটোর দাম ৬০ টাকা।
কৃষক কামাল আরো বলেন, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এই ৪৮ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষে খরচ হয়েছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা। আশা করছি; এই জমিতে অন্তত একশত মণ টমেটোর ফলন হবে। যা বাজারে প্রায় দুই লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে। এতে করে খরচ বাদে এ বছর এই টমেটো থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো লাভবান হবো ইনশাআল্লাহ।
জানা যায়, লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘লাভজনক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসূচির’ আওতায় কৃষক মো. কামাল মিয়াকে বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদান করা হয়। যেখানে রয়েছে বারি হাইব্রিড টমেটো-১১ জাতের বীজ। এ জাতে আগাম মৌসুমে অধিক ফলন পাওয়া যায়। যার ফলে চাষিরাও লাভবান হন।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষক কামালকে বিনামূল্যে সার-বীঝ প্রদানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে করে তিনি টমেটোর ভালো ফলন পেয়েছেন। যা বাজারে বিক্রি করে ওই কৃষক ভালো লাভবানও হবেন।
এই কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস সব সময় কৃষকদের পাশে রয়েছে। নতুন করে কেউ কোনো ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হলে তাকেও আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। আমরা চাই; কৃষকদের চাষাবাদের মাধ্যমে লালমোহন উপজেলা বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনে এগিয়ে যাক। কৃষি উৎপাদন বাড়লে উপজেলার অর্থনীতিও আরো চাঙা হবে বলে মনে করছি।