সর্বশেষঃ

ভোলায় পিয়াজের দাম চড়া ॥ পাঁচ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ভোলায় এক রাতের ব্যাবধনে পিয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার পর দিনই ভোলায় দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোয় অসহায় হয়ে পড়া ক্রেতারা বাজার মনিটর জোরদার করা সহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ভোলা জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে এমন চিত্র জানা গেছে।
ভোলা শহরের বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার রাত পর্যন্ত দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পরপরই পেঁয়াজ বাজার থেকে উদাও হয়ে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী পিয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেন আবার অনেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন। শনিবার দুপুর ১২টায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ ছোট-বড় সাইজ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পাশাপাশি দোকানেও পেঁয়াজের ভিন্ন দাম হাঁকাচ্ছেন খুচরা ক্রেতারা।
এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়াতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই মন্তব্য করছেন দেশটা মগের মুল্লুক হয়ে পরেছে, অনেকে বলছে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পরছে দেশটা। আবার অনেকে বলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের পকেট কাটছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যাবসায়ী যার সাথে রাজনৈতিক প্রশয় থাকতে পারে। পিয়াজের দাম চড়া হওয়ায় আমরা সাধারণ ভোক্তারা দিশেহারা।
তবে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি খুচরা থেকে আড়তদারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের দিনে যা বিক্রি হয় তা আমরা আড়ৎদারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে খুচরা বিক্রি করি। যেমন দামে কিনি তার চেয়ে কেজি প্রতি ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রী করি। আমাদের মজুদ করার মতো গুদাম নেই। গতকাল বিকেল থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হবে বলে বাজারে গুঞ্জন শোনা যায়। সকালে যখন পেঁয়াজ আনতে আড়তে যাই তখন আমাদের বেশি দামেই কিনে আনতে হয়েছে। তাই আমরা বেশি দামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করছি। এখানে খুচরা ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই, আমরা যে টাকায় কিনি সামান্য লাভে তা বিক্রি করি।
পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে কোনো আড়ৎদার গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি, আড়তে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। একাধিক আড়ৎ মালিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগে চেষ্টা করলে তা রিসিভি না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ খবর জানার সাথে সাথেই আমাদের একাধিক মোবাইল টিম বাজার তদারকি করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।
এদিকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে ভোলায় পাঁচ ব্যবসায়ীকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। হঠাৎ করে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত হোসেন এ জরিমানা করেন। এ সময় ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, ভোলার কাঁচা বাজারে চড়া মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করায় দুই আড়তদারকে ২০ হাজার টাকা এবং খুচরা তিন বিক্রেতাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল কাসান বলেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেউ যদি উচ্চমূল্যে পেঁয়াজ বা অন্য পণ্য বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।