সর্বশেষঃ

যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে দৌলতখানে পাঠদান থেকে বঞ্চিত কয়েকশত শিশু

এইচ এম নাহিদ ॥ বড় হয়ে কি হতে চায় এমন স্বপ্ন সব শিশুকেই দেখতে বলা হয়। বিষয়টি এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ে আবশ্যকীয় করা হয়েছে। এর প্রভাব খাতা কলমে থাকলেও বাস্তবে কোন গতি নেই। সরকারি পৃষ্ঠ-পোষকতার অভাবে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু পাঠশালায় না গিয়ে শিশু শ্রমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। জন্ম থেকেই দরিদ্র, পূর্বসূরিরা লেখাপড়া করেনি। স্বপ্ন কিভাবে দেখতে হয় তারা জানেনা। পরিবারের বড়রা কেউ নদীতে জাল বায় আবার কেউ জমিতে লাঙ্গল চালায়। শিক্ষা কি কখনো বুঝেনা তবে তারা লেখা পড়া করতে চায়। ঘটনাটি ভোলার দৌলতখাঁন উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের আপনের কলনী নামক আবাসন এলাকায়। ইউনিয়নে দু’টি সরুখালের প্রতিবন্ধকতায় কয়েক শত শিশু পাঠদান থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
অভিবাবকদের দাবী, পোলাপান স্কুলে গিয়ে পড়তে চায়। হের জন্য নিজেরা খরচা করে একটি রাস্তা বানছি। কিন্তু খাল বান্দুম ক্যামনে। চেয়ারম্যান সাবরে কয়েকবার কইছি খালের উপর একখান হাক্কা (সাকো) বানাইয়া দিতে, কয়েকবছর পার হইলেও চেয়ারম্যান সাব কোন কানের মাছিও লারেন না। এর লাইগা বাইদ্য (বাধ্য) হইয়া পোলাপাইনেরে খেতে, খামারে, নদীতে পাঠাই। ঘরে বইয়া থাকলেতো কোন লাভ হইবোনা।


স্থানিয়দের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠিতে শিক্ষার আলো ছাড়ানোর জন্য সরকার গ্রামীণ জন উন্নয়নে বছরে কোটি টাকার বরাদ্ধ দেয়। কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠ-পোষকতায় তার বাস্তবায়ন কখনো চোখে পড়েনা। আপনের কলনী থেকে পাটওয়ারী বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শিশুদের স্কুলে যেতে হয়। যদি সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্রাথমিক স্কুল হত, তাহলে অবহেলিত এই শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে অকালেই ঝড়ে পরতো না। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে খালের উপর দু’টি কালভার্ড করে দিতে পারে।
আপনের কলনীর একাধিক শিশু বলছে, কাম করতে ভালা লাগেনা। স্কুলের টুলে বইয়া পড়তে মন চায়। যদি রাস্তাখান বালা থাকতো তাইলে স্কুলে যাইতাম, একখান হাক্কা বানাইয়া দিবেন ? এমন প্রশ্নেরে উত্তর মদনপূর ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন নান্নুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কয়েকবার ইউএনও সাহেবকে দু’টি কালভার্ড করার জন্য বলছি। তিনি বলছেন বরাদ্দ হলে করা যাবে। একটি ইমারজেন্সী সাকোর ব্যবস্থার কথা বললে তিনি বলেন, একটি হাক্কা (সাকো) বানাইতে অনেক খরচা, সেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।


দৌলতখাঁন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠান মো. সাইদুজ্জামের সাথে ঘটনার বিষয়ে আলাপ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। আমি বিষয়টি পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।