সর্বশেষঃ

ভোলার বাজারে মিলছে না আলু !

ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সরকার দাম নির্ধারণের পরও মানছিলেন ভোলার আলু ব্যবসায়ীরা। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছিল আলু। তবে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই ভোলার বাজারে আলু পাওয়া যাচ্ছে না। ভোলার বিভিন্ন আড়ৎ ও খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে আলু কিনতে এসে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে ক্রেতাদেরকে। বিক্রেতারাও আলু ছাড়াই অন্য মালামাল নিয়ে বসে আছেন দোকানে। আড়তদারদের দাবি, মোকাম থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু কিনতে পারছেন না। বেশি দামে আলু কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে গেলে প্রশাসন তাদেরকে জরিমানা করছেন তাই তারা আলু আনছেন না।
শনিবার দুপুরে ভোলার কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষক মো. মনির হোসেন জানান, বাসা থেকে আলু কেনার জন্য বাজারে এসে দেখেন কোনো দোকানেই আলু নেই। সবশেষে আড়তে গিয়েও আলু পাননি তিনি। তাই অন্য তরকারি কিনে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। আলু কিনতে আসা ডা. এম এ বাছেদ বলেন, এতো দিন দাম বেশি হলেও বাজারে পাওয়া যেতো। কিন্তু আজ পুরো বাজারে আলু নেই। সরকারে উচিত বিষয়টি ভালোভাবে তদারকি করা।
ভোলার কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. মনির ও ভুট্টুসহ ৮-৯ জন ব্যবসায়ী জানান, আড়ৎ থেকে সরকার নির্ধারিত দামে আবার কখনও তার চেয়ে দুই টাকা বেশি দিয়ে আলু কিনতে হয়। আবার এক বস্তা আলুতে দুই থেকে তিন কেজি কম হয়। এ অবস্থায় কোনোভাবেই ৩৫-৩৬ টাকা কেজি আলু বিক্রি করা যায় না। আড়ৎ থেকে আলু কেনার চালান চাইলে তারা দিতে চাচ্ছে না। কিন্তু প্রশাসন এসে বেশি দামে আলু বিক্রি করলে জরিমানা করে। তাই তারা আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।
আড়তদার মো. শরীফ জানান, আলু মোকাম থেকে ব্যাপারীরা এনে বিভিন্ন আড়তে দেয়। তাদের বেধে দেওয়া দামে আড়তদারদের বিক্রি করতে হয়। কিন্তু মোকাম থেকে কোনো চালান দেয় না। তাই তারাও খুচরা বিক্রেতাদের চালান দিতে পারছেন না। মোকাম থেকে আলু এনে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করা যাচ্ছে না বিধায় তারাও আলু আনা বন্ধ রেখেছেন। তাই বাজারে আলুর সংকট দেখা দিয়েছে।
ভোলার কাচাবাজার আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আলুর দাম বৃদ্ধিতে আড়তদারদের কোনো দোষ নেই। মোকাম থেকে আলু আনেন ব্যাপারীরা। তারা যেই দামে এনে আড়তে দেয় তারা সেই দামে বিক্রি করেন। এখানে আড়ত মালিক কেজিতে ৬০ পয়সা কমিশন পায়। এখন মোকামে দাম বেশি হওয়ায় ব্যাপারীরা লোকশানের ভয়ে আলু আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবির জানান, ভোলায় ৯৮ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হয়ে থাকে। আর ভোলাতে চাহিদা রয়েছে ৪২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন। তবে ভোলায় হিমাগার না থাকায় আলুর মৌসুমে এগুলো সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। এ জন্য ভোলার উৎপাদিত আলু নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার ব্যাপারী কিনে নেয় সেখানকার হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এ মৌসুমে জেলার বাহির থেকে ভোলায় আলু আনতে হয়। তাই ভোলায় কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি হিমাগার থাকলে ভোলায় উৎপাদিত আলু দিয়ে এখানকার চাহিদা পূরণ করে জেলার বাহিরেও পাঠানো যেতো।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, ভোলায় স্থানীয়ভাবে আলু তেমন উৎপাদন নেই। বাহির থেকে এনে আলু বিক্রি করতে হয়। এখন কী কারণে আলুর সংকট তৈরি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও যাতে করে কেউ গুদামজাত করে বা অন্য কোনোভাবেই যেনো কৃত্রিম সংকট তৈরি বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বজার মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করছেন। সুত্র : কালের কণ্ঠ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।