লালমোহনে অমৌসুমের টমেটো চাষে আব্দুল লতিফের সাফল্য

জাহিদ দুলাল, লালমোহন ॥ মো. আব্দুল লতিফ। ভোলার লালমোহন উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ফুলবাগিচা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার তিনি। পাশাপাশি একজন সফল কৃষকও আব্দুল লতিফ। এ বছর নিজ বাড়ির আঙিনায় ১০ শতাংশ জমিতে অমৌসুমে টমেটো চাষ করেন তিনি। ওই টমেটো চাষে সফলতা পেয়েছেন তিনি। আব্দুল লতিফ ফুলবাগিচা এলাকার মোজাফ্ফর পন্ডিত বাড়ির বাসিন্দা।
তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে আমাকে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের জন্য প্রদর্শনী দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে এ টমেটো চাষ শুরু করি। এ জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয় বীজ। ওই বীজ রোপণের এক মাসের মধ্যে চারা গজায়। বাড়ির আঙিনার ১০ শতাংশ জমিতে মালচিং পেপার দিয়ে বেডে ওই চারা রোপণ করি। চারা রোপণের তিন মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। এখন গাছগুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলছে টমেটো।
পোস্ট মাস্টার আব্দুল লতিফ আরো জানান, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম থেকে স্থানীয় বাজারে ওই টমেটো বিক্রি শুরু করি। এ টমেটো অমৌসুমে হওয়ায় বাজারে দামও ভালো। ইতোমধ্যে ৫ হাজার টাকার বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা মূল্যে বিক্রি করছি। আশা করছি ক্ষেত থেকে অর্ধলক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবো। এর পিছনে আমার খরচ হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। এ টমেটো চাষে পরিশ্রমও অনেক কম হয়েছে। অবসর সময়ে টমেটো গাছগুলোর নিজেই পরিচর্যা করছি।
স্থানীয় মো. মিজানুর রহমান বলেন, আব্দুল লতিফ একজন কৃষি প্রেমি মানুষ। পোস্ট অফিসে চাকরির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সময় নানান ধরনের কৃষি চাষাবাদ করেন। তাতে তিনি সফলও হচ্ছেন। তার দেখাদেখি আমি নিজেও বিভিন্ন কৃষি চাষাবাদ করছি। এতে আমি নিজেও সফলতা পাচ্ছি। এছাড়া স্থানীয় অনেকে পোস্ট মাস্টার আব্দুল লতিফের দেখাদেখি কৃষি চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।


এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র মজুমদার জানান, আব্দুল লতিফ কৃষি চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহী ব্যক্তি। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করায় তাকে বিনামূল্যে বারি হাইব্রিড টমেটো-১১ জাতের বীজ, সার ও গাছের শক্তি বৃদ্ধির জন্য হরমোন দেওয়া হয়েছে। টমেটো চাষ করে তিনি ব্যাপক সফলতাও পেয়েছেন। এছাড়া তার যেকোনো প্রয়োজনে তিনি কৃষি অফিসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আমরা তাকে সব সময় প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ সহযোগিতা দিচ্ছি।
এই কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, অমৌসুমে যেকোনো কৃষি পন্যের বাজার মূল্য ভালো থাকে। তাই কেউ যদি এই অফ-সিজনে নতুন কোনো ধরনের ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হয়, তাহলে উপজেলা কৃষি অফিস সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে ওই কৃষি উদ্যেক্তার পাশে থাকবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

You cannot copy content of this page