দৌলতখানে মুক্তা চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন দুই ভাই

মেদুয়া প্রতিনিধি ॥ ভোলায় প্রথমবারের মতো মুক্তা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন ভোলার দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের দুই ভাই জিহাদ ও জাহিদ। ইউটিউব দেখে মুক্তা চাষের উদ্যোগ নেয় তারা। তাদের চাষ করা মুক্তা প্রায়ই বিক্রি উপযোগী হয়ে উঠেছেন।
জানা গেছে, ভোলার দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জিহাদ ও জাহিদ হোসাইন। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। পেশায় একজন সেনা সদস্য, অন্যজন গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার কর্মী। ২০২২ সালের দিকে ইউটিউব দেখে মুক্তা চাষে আগ্রহী হন তারা। এরপর ওই বছরই ডিসেম্বর মাসের দিকে নওগাঁ থেকে ঝিনুক ও মুক্তার ডিজাইন এনে তাদের বাড়ির পাশে দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের মেদুয়া গ্রামের তাদের নিজস্ব ২৪ শতাংশ জমির পুকুরে শুরু করেন মুক্তা চাষ। তারা এক হাজার ঝিনুক ও ডিজাইন এনে ৩৫টি খাঁচায় ভরে পুকুরে ছেড়ে দেন। এতে তাদের সবমিলে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি ১৫ দিন পরপর তারা পুকুরে সার ও চুন দেন। এ জন্য খরচ হয় ৫০০ টাকা।
জিহাদ ও জাহিদ জানান, তাদের মুক্তার আটটি ডিজাইন রয়েছে। এখন তাদের মুক্তার বয়স প্রায় ৯ মাস। আগামী ৪ মাসের মধ্যেই তারা মুক্তা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। প্রতিপিস মুক্তার পাইকারি বাজারদর দুই থেকে আড়াইশ টাকা। বিক্রি উপযোগী মুক্তার বাজার মূল্য তখন আনুমানিক ২ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা হবে তারা ধারনা করতেছেন। প্রথমবারই মুক্তা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ার আশা করছেন এ দুই যুবক। মুক্তা চাষের কথা শুনে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের খামারে স্থানীয় বেকার যুবকরা ভিড় জমাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ২-৩ জন মুক্তা চাষ শুরু করেছেন। যদি মৎস বিভাগ তাদের একটু সহযোগিতা করে তারা আরো সফল হবে বলেও জানান জিহাদ ও জাহিদ।


একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জামাল জানান, তিনি জিহাদ ও জাহিদের দেখাদেখি মুক্তা চাষে আগ্রহী হন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে তিনিও জুলাই মাসের শেষের দিকে তাদের বাড়ির সামনের ৩০ শতাংশ পুকুরে ১৮০০ পিস ঝিনুক নিয়ে মুক্তা চাষ শুরু করেছেন। তিনিও জিহাদ ও জাহিদের মতো মুক্তা চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
মেদুয়া গ্রামের বাসিন্দা রাকিব বলেন, তাদের গ্রামে পুকুরে যখন জিহাদ ও জাহিদ মুক্তা চাষ শুরু করেন, তখন অনেকে হাসি-ঠাট্টা করেছেন। কারণ তাদের ধারণা ছিল, গ্রামের পুকুরে মুক্তা চাষ সম্ভব নয়। কিন্তু এখন তাদের মুক্তা চাষের সফলতা দেখে গ্রামবাসী অবাক।
দৌলতখান উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মাহফুজুর রাহমান বলেন এই বিষয়টি শুনে পুকুরের কাছে কয়েক বার গিয়েছেন তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এবং তাদের সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।