মনপুরার মেঘনায় জলদস্যুদের হামলা, ২ জেলে অপহরণ ॥ ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী
নজরুল ইসলাম মামুন, মনপুরা ॥ ভোলার মনপুরা ও নোয়াখালীর হাতিয়া সীমান্তবর্তী মেঘনায় ইলিশ শিকারের সময় ৩ জেলে ট্রলারে হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী হামলা চালায়। এই সময় জলদস্যুরা এলোপাতাড়ি মারধর করে ৩ ট্রলারে থাকা মাছ, মালামালসহ জেলেদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে ২ মাঝিকে অপহরণ করে হাতিয়ার গহীন বনে নিয়ে যায়। অপহৃত ২ মাঝির মুক্তিপণ হিসাবে ৩ লক্ষ টাকা দাবী করছেন জলদস্যুরা। জেলে ট্রলারে হামলা ও অপহৃত ২ জেলের মুক্তিপণ হিসাবে ৩ লক্ষ টাকার সত্যতা নিশ্চিত করেন অপহৃত জেলেদের আড়তদার বাবু মোহনলাল চক্রবর্তী ও জেলে পরিবারের সদস্যরা। বুধবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭ টায় ভোলার মনপুরা ও নোয়াখালী হাতিয়ার সীমান্তবর্তী উড়ির চর এলাকা সংলগ্ন মেঘনায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে বেলা ১২ টায় অপহৃত জেলে পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোনে ফোন করে জনপ্রতি দেড় লক্ষ টাকা করে ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে জলদস্যুর মহিউদ্দিন বাহিনী। অহৃত জেলেরা হলেন, রহিম ও সুজন মাঝি। এদের বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামে। এছাড়াও জলদস্যুদের মারধরে আহতরা হলেন, সাহেদ, সাগর, শামীম, সাহিদ, জুয়েল, মহিউদ্দিন, হাবিব, শরিফ, রাসেদ, ছিদ্দিক, জাহাঙ্গীর, নিজাম ও কালু। এদের সবার বাড়ি একই এলাকায়।
জেলেদের সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল ৭ টায় হাতিয়া ও মনপুরার সীমান্তবর্তী উড়িরচর সংলগ্ন মেঘনায় জাল পেতে মাছ শিকারের সময় হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী হামলা চালায়। এই সময় জলদস্যুরা শর্টগানের গুলি করে। পরে ৩ জেলে ট্রলার একত্রিত করে হামলা করে। ৩ ট্রলারে থাকা জেলেদের মারধর করে মাছ, মালামাল ও মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়। জলদস্যুরা যাওয়ার সময় দুই ট্রলার থেকে রহিম ও সুজন মাঝিকে অপহরণ করে হাতিয়ার গহীন বনে নিয়ে যায়। পরে বেলা ১২ টায় অপহৃত দুই জেলে পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোনে ফোন করে ২ জেলের মুক্তিপণ বাবদ ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে জলদস্যুরা।
এ ব্যাপারে অপহৃত জেলেদের আড়তদার বাবু মোহনলাল চক্রবর্তী জানান, উড়ির চর সংলগ্ন মেঘনায় মাছ শিকারের সময় হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী হামলা চালিয়ে ২ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এছাড়াও জেলে ট্রলারে থাকা মাছ, মালামালসহ মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২ জেলে মুক্তিপণ বাবদ ৩ লক্ষ টাকা দাবী করছে জলদস্যুরা বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মনপুরা কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মোঃ হানিফ জানান, জেলে অপহরণের ঘটনা আমারে কেউ অবহিত করেনি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, আপনার কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।