শেষ মুহূর্তে লালমোহনের কামারপল্লী কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন

জাহিদ দুলাল, লালমোহন প্রতিনিধি: আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানি ঈদ। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে এদিন পশু কোরবানি করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এসব পশুর মাংস কাটতে ছুরি, দা ও বটিসহ বিভিন্ন ধরনের ধাতব হাতিয়ার অতিগুরুত্বপূর্ণ। এসব হাতিয়ার তৈরিতে এখন শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভোলার লালমোহনের কর্মকাররা। বৃহস্পতিবার ঈদ হওয়ায় একদিকে নতুন হাতিয়ার তৈরি ও অন্যদিকে পুরাতন হাতিয়ারে শান দেওয়ায় ব্যস্ত থাকায় দম ফেলানোর সময় নেই তাদের। বুধবার লালমোহন পৌরশহরের কামারপট্টি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ওই স্থানের বাবুল কর্মকার জানান, গত ৪০ বছর ধরে তিনি এ কাজ করছেন। কোরবানির ঈদ আসলেই বাড়ে তাদের কাজ। গত ১৫ দিন ধরে কাজের ব্যাপক চাপ রয়েছে। এতে করে দৈনিক বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। কাল ঈদ। এখনও কাজের চাপ রয়েছে। অনেকের রেখে যাওয়া বিভিন্ন দা, ছুরি ও বটিসহ বিভিন্ন ধাতব হাতিয়ার কাজ করে আজকের মধ্যেই বুঝিয়ে দিতে হবে। তাই এখন ব্যাপক ব্যস্ত সময় কাটছে।
একই স্থানের আরেক কর্মকার সুমন বলেন, এবছর ঈদ উপলক্ষে বিক্রি ভালো। প্রতি পিস বটি আকারভেদে সাড়ে তিনশত থেকে সাড়ে সাতশত টাকা বিক্রি হচ্ছে। দা প্রতি পিস আড়াইশত থেকে পাঁচশত টাকা। এছাড়া ছুরি ও অন্যান্য জিনিস আকার ও মান অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।
কামারপট্টিতে বটি, দা ও ছুরি শান দিতে আসা মো. মাকসুদ উল্যাহ জানান, কাল ঈদ। তাই পুরনো দরকারি জিনিসগুলো উপযোগী করে তুলতে এখানে এসেছি। কামাররা ন্যায্য মূল্য রাখছেন। নিজের সাধ্যের মধ্যেই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কাজ সেরে নিয়েছি।
ওই স্থানে নতুন দা ও ছুরি কিনতে আসা আরেক ক্রেতা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এবছর নতুন দা-ছুরির দাম কিছুটা বেশি। তবুও প্রয়োজনীয় হওয়ায় কিনতে হচ্ছে। কাল কোরবানি ঈদ উপলক্ষে এসব অতিগুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে লালমোহন পৌরশহরের এসব কামারদের দাবি, ঘর ভাড়া নিয়ে দোকান করায় তাদের অনেক টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। তাই সরকারি উদ্যোগে যদি নির্দিষ্টভাবে একটি কামার পল্লী নির্মাণ করা হয় তাহলে এসব কামাররা অতিরিক্ত খরচ থেকে রক্ষা পাবেন। যার মাধ্যমে টিকে থাকবে বহু বছরের এই ঐতিহ্য।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।