সর্বশেষঃ

বোরহানউদ্দিনে দেউলা লঞ্চঘাট’র উদ্বোধন ॥ ৬০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান

মনিরুজ্জামান, বোরহানউদ্দিন ॥ দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর প্রতিক্ষার পর অবশেষে উদ্বোধন হলো ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার নবনির্মিত আধুনি “দেউলা লঞ্চঘাট”। এর ফলে দূর্ভোগ ও কষ্ট লাগব হতে যাচ্ছে উপজেলার দেউলা লঞ্চঘাট দিয়ে ঢাকায় আসা-যাওয়া করা শত-শত সাধরণ যাত্রীদের। শনিবার (২৪ জুন) সকাল ১২ টায় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর বাস্তবায়নে নবনির্মিত লঞ্চঘাটে ১২০ ফিট লম্বা পল্টু ন ও ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের জেটি (রাস্তা) উদ্বোধন করেন ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল।
সাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিবুল্যাহ মৃধা ও স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পূর্ব থেকে চালু হওয়া এই ঘাটটিতে কোনো পল্টুন না থাকায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হতো লঞ্চ যাত্রীদের। প্রতিনিয়ত হাটু কোমর পানি অথবা নৌকায় করে লঞ্চে উঠতে হতো, কিন্তু এখন থেকে আর সেই দূর্ভোগ থাকছে না। দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পর পল্টুন পেয়ে প্রান চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে। ইতিমধ্যে ঢাকা-লালমোহন রুটে চালু হয়েছে দিবা সার্ভিস লঞ্চ, যা যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। লঞ্চগুলোতে বেড়েছে যাত্রীর চাপ।
উদ্বোধনের পর স্থানীয় আলতাফ কাজি ও ফারুক মিয়া জানান, পল্টুন হওয়াতে লঞ্চে উঠা নামা করতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। দীর্ঘ বছর ধরে আমরা কষ্টে ছিলাম, এখন সেটা থেকে মুক্ত হলাম।
ওই এলাকার আরপন আলী (৫৫) জানান, আমার জন্মের পূর্ব থেকে এখানে নিয়মিতভাবে লেতরা ও লালমোহন রুটে চলাচল করা লঞ্চ গুলো ঘাট করে আসছে। কিন্তু কোনো পল্টুন না থাকায় কখনো নৌকায় করে কখনো হাটু কোমর পানিতে নেমে লঞ্চে উঠতে হয়। এখন পল্টুন নির্মাণ সহ সকল সুবিদা থাকায় আমরা খুশি। এত বছর পর হলেও আমরা এখন স্বাভাবিকভাবে লঞ্চে উঠতে পারবো।
মোঃ জুয়েল, আনসার ও শাকিলসহ অনেক যাত্রীরা জানান, এই লঞ্চঘাটটি দেউলা-সাচড়ার মানুষদের কাছাকাছি হওয়ায় দূর্ভোগ সত্যেও শত-শত যাত্রীরা এখান দিয়ে আসা যাওয়া করছে। এখানে একটা পল্টুন নির্মান আমাদের প্রানের দাবী ছিল। এত বছর পরে এখন আমাদের চাওয়া পূরণ হলো।


স্থানীয় কাচারী হাট বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ রাছেল ও অনীল চন্দ্র জানান, লঞ্চ যোগে এই ঘাট দিয়ে ঢাকা থেকে পন্য আনলে লঞ্চ থেকে নামাতে আমাদের অনেক সমস্যায় পরতে হতো এবং খরচও বেশি হতো। পল্টুন নির্মাণ হওয়ায় আমাদের আশেপাশে যত গুলো বাজার আছে সেখানের সকল ব্যবসায়ীরাই উপকৃত হবেন।
লঞ্চঘাটের ইজাদার সজল আরিন্দা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে এখানে লঞ্চঘাট থাকলেও কোন পল্টুন ছিল না। তাই প্রতিদিন সাধারণ যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হতো, আজ আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হলো।
বরিশাল অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো: মামুন উর রশিদ বলেন, এসব স্থাপনের ফলে বর্তমানে দেউলা লঞ্চঘাটটি একটি আধুনিক লঞ্চঘাট হলো। এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, পৌর মেয়র মো: রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন হায়দার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ মিয়া, সাচড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মহিবুল্লাহ মৃধা, ঘাট ইজারাদার সুজন আরিন্দা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।