সর্বশেষঃ

অসহায়দের ভিড় বেড়েই চলছে বিবা’র মানবতার দেয়ালে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোলায় বিবা’র মানবতার দেয়ালে অসহায় মানুষদের ভিড় দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতি শুক্রবার ১০টায় এখান থেকে নিয়মিতভাবে সবজি বিতরণ করা হয়। দূর দূরান্ত থেকে আসা অসহায় মানুষগুলো রিক্সাযোগে এসেও তাদের সবজি গ্রহণ করে থাকে। ভোলা শহরের যুগীরঘোল এলাকায় বিবা’র মানবতার দেয়াল নামক এই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। দি বেস্ট ইনিশিয়েটিভ অব ভোলা এসোসিয়েশন এর আয়োজনে এখানে অসহায় মানুষের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নতুন ও পুরাতন পোশাক। যে যার প্রয়োজন মতো সেখান থেকে এই পোশাক নিয়ে যাচ্ছে। আবার যাদের অনেক আছে তারা রেখে যাচ্ছে। সামান্য বিনোদনের জন্য রয়েছে দেয়ালিকা।যেখানে প্রতিদিনের স্থানীয় দৈনিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা লাগানো থাকে। পথচারীরা ইচ্ছে হলেই চোখ বুলিয়ে নিতে পারে পত্রিকাগুলোতে। সবচেয়ে বেশী যেটি প্রভাবিত করে অসহায় মানুষদের তা হলো প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার এখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। যা ভোলায় এখন পর্যন্ত নজিরবিহীন একটি বিষয়। ওই দিনগুলোতে ৫০ এর অধিক পরিবারকে এই সহায়তার আওতায় আনা হয়। অসাধারণ এই বিষয়টি নজর কেড়েছে অনেক বিত্তবানদের। তাই প্রতি শুক্রবার অসহায় এই মানুষগুলোর পাশে দাড়াতে যে যার মতো সহায়তার হাত বাড়াতে ছুটে আসে এই বিবা’র মানবতার দেয়ালে।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৩ জুন) বিবা’র মানবতার দেয়ালে এসেছেন জেলা পুলিশ সুপার ভারপ্রাপ্ত আছাদুজ্জামান এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুল ইসলাম। পুলিশ কর্মকর্তা ডিআই ওয়ান খাইরুল কবির উপস্থিত থেকে বিদায়ী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম এর ৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসানুল কবির। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক, সাংবাদিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র। উপস্থিত সকলে দাড়িয়ে থেকে অসহায় মানুষ গুলোর হাতে বিবা’র মানবতার দেয়ালের পক্ষ থেকে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন।সেই সাথে অন্যের প্রয়োজনে কিছু পোশাক রেখে যান।
বিবা’র মানবতার দেয়াল প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান বলেন, আমি ভালোবাসার টানে মানবতার দেয়ালে ছুটে আসি। উদ্বোধনের পর থেকে বিবা’র মানবতার দেয়ালটি মানব সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।
নির্বাহী অফিসার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী বিবা’র মানবতার দেয়ালের পাশে দাঁড়াতে পারি। তিনি আরো বলেন, আমরা যখন বিভিন্ন মৎস্য অভিযান পরিচালনা করি তখন ঐ জব্দকৃত মাছ অসহায়দেন মাঝে বিতরণ করতে পারি।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসান উল কবির বলেন, আমাদের সরকারি কর্মকর্তারা যারা আমরা এখানে কোরবান দিয়ে থাকি তাদের এখানে আত্মীয়-স্বজন থাকে না, সুতরাং তাদেরকে যদি আমরা বুঝাতে পারি পারি তাহলে তাদের কোরবানির তিন ভাগের এক ভাগের অংশ আমরা এখানে মানবতার দেয়ালে দিতে পারি। অসয় মানুষদের অনেক উপকারে আসবে।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম জানায়, ভোলায় ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় যারা জিপিএ-৫ পেয়েছিলো তাদের সংবর্ধণা দেয়ার মধ্যে দিয়েই আমাদের এই পথচলা শুরু। এরপর করোনা কালীন সময় থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমরা মানবতার দেয়াল এর মাধ্যমে মানবিক কাজে সহযোগিতা করে আসতেছি। সারা দেশে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ওই সময় ভোলায় সর্বপ্রথম আমরা হাত ধোয়া কর্মসূচি চালু করি। পরবর্তীতে আমরা এই বিবা’র মানবতার দেয়াল চালু করি। মানবতার এই দেয়ালটির ধারাবাহিকতা রক্ষায় সকলের সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য। সহযোগীতা পেলে প্রতিটি এলাকায় এর শাখা খোলা যাবে। এতে করে অসহায় মানুষগুলোর মুখে আমরা একটু স্বস্থির হাসি দেখার সুযোগ পাবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।