বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ॥ বাংলাবাজার ২-০ তে বিজয়ী
খেলা শেষে ফেরার পথে আব্দুল জব্বার কলেজের খেলোয়াড়দের উপর হামলা ॥ আহত-৮
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলা শেষে ফেরার পথে দুই কলেজের খেলোয়ারদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে জয়নগর স্কুলের সামনে বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজ ও বোরহানউদ্দিন আব্দুল জব্বার কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আব্দুল জব্বার কলেজের অন্তত ৮ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে এমন খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৫ শিক্ষার্থী বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, ভোলায় চলছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টের সোমবার ছিল সেমিফাইনাল খেলা। এ খেলায় ভোলা সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মুখোমুখি হয় বাংলাবাজার ফাতেমা খানম ডিগ্রী কলেজ বনাম বোরহানউদ্দিনের সরকারী আব্দুল জব্বার কলেজ। খেলায় বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজ ২-০ গোলের ব্যবধানে জয়ী হয়ে ফাইনালে পৌছে। খেলা শেষে আব্দুল জব্বার কলেজের শিক্ষার্থীরা ফেরার পথে বিকাল ৬টার দিকে বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজের শিক্ষার্থী কর্তৃক জয়নগর স্কুলের সামনে হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ তুললেন বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজ এর শিক্ষার্থীরা। এ সময় হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের বহনকরা মাইক্রোবাসটিতে হামলা করে ভাংচুর করেন। এতে অন্তত ৮ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে আব্দুল জব্বার কলেজের ৫ জন শিক্ষার্থী বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। আহতরা হলেন, মো: জিয়া (১৯), অর্নব (১৯), মিথুন (১৯), শাহিন (২০), সোহাগ (২০)।
আহত সোহাগ ও অর্নব বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে মাঠে যাই। খেলার মধ্যে দুই দলেরই সবসময়ই একেক রকম দাবি থাকে মাঠে। এসব দাবি দাওয়া নিয়ে তর্ক বির্তক হয়। পরবর্তীতে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে ফেরার পথে বাংলাবাজার জয়নগর স্কুলের সামনে এলে ফাতেমা খানম কলেজের শিক্ষার্থীরা ৩০-৪০ জন লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচু করে। বর্তমানে আমরা বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি।
এ ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে পরিদর্শন করেন বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনির হোসেন মিয়া। তিনি বলেন, ঘটনা ঘটেছে দৌলতখান থানার মধ্যে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আমি শুধু আহতদের দেখতে এসেছি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সরকারি আবদুল জব্বার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাখাল চন্দ্র মিস্ত্রী, বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান জান মুন্না, সরকারি আবদুল জব্বার কলেজের সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ।
বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ রাখাল চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, ঘটনা শুনে আমি হসপিটালে গিয়ে দেখি ৭-৮ জন আহত। ৫ জন ভর্তি, বাকী ৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় দুই কলেজ কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। যদি জেলা প্রশাসন দুই কলেজের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনা সমাধানের উদ্যোগ না নিতেন তাহলে আমরা অবশ্যই মামলা করতাম।
বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজ এর অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ বলেন, খেলার মধ্যে আব্দুল জব্বার কলেজের এক খেলোয়ারের সাথে আমাদের কলেজের গোলরক্ষক এর মধ্যে তক-বিতর্ক হয়। তখন বিষয়টি রেফারীসহ আমাদের দুই কলেজের শিক্ষকরা মাঠেই তা সমাধান করেন। পরে খেলা শেষে ফেরার পথে আব্দুল জব্বার কলেজের খেলোয়াররা জয়নগর স্কুলের সামনে শুনেছি হামলার শিকার হয়েছে। কে বা করা করেছে তা আমরা বলতে পারি না। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রসাশন কার্যায়ের দুই কলেজের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে। সেখানে সৃষ্ট ঘটনার সমাধান দেয়া হবে। এ ঘটনায় যে বা যারা জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।