মধ্যরাত : পর্ব-১৬৮
ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),
(গত পর্বের পর) : আরে আমাদের মিস প্রফেসারের পেটে, পেটেত ভাল বুদ্ধি আছে। ঠিকই বলেছে, ওদের সকলকে বলতে হবে। আমি বললাম, এত ঘটা করে লাভ কি ? ব্রেক ফাষ্ট সেরে ডোরা গাড়ী নিয়ে বেড়িয়ে যেতে চইল। বলল, উমাদি যাবেন সপিং-এ। সুশান্ত দা, প্রশান্ত যাবে ? আমরা সকলেই বললাম না, কাল সারাদিনই-ত গাড়ীতে, আজ আর কোথাও যেতে ইচ্ছে করছেনা। শুয়ে শুয়ে ঘুমুই। ডোরা বের হয়ে গেল। আমি শুয়ে শুয়ে থর্নবার্ড বইটা ডোরার বুক সেলফ থেকে বের করে পড়ছিলাম। সুশান্ত উমা ড্রইং রুমে বসে গল্প করছিল। এমন সময় দোলা ও কচের ফোন এল, দাদু তোমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না-ত ? তোমার শরীর ভাল ? আমি বললাম, ভাল। তুই কচ ভাল আছিস-ত ? কুসুম জামাই সব ভাল ? দোলা বলল, দাদু কুসুম তোমার সাথে বথা বলতে চায়। আমি বললাম হ্যালো ? কুসুম বলল, নমস্কার দাদু, আমার এখানে আসবেন না ? আপনার শরীর ভাল-ত ? বললাম, ভাল। কুসুম বলল, দাদু আমরা সকলে আজ বিকালে আপনার সাথে দেখা করতে আসব। আমি বললাম ডোরা এখন বাসায় নেই, ও আসলে ওকে বলব।
ফোন ছেড়ে দিলাম। এর মধ্যে ডোরা সপিং থেকে ফিরে এলো। ডোরাকে বললাম, কুসুমরা বিকালের দিকে বেড়াতে আসবে। ও শুনে মৃদু হাসল, বলল বেশ-ত ? ও অনেক জিনিস কেনা-কাটা করে এনেছে। অনেক মাংস, অনেক ভেজিটেবল। বললাম, ডোরা এত খাবে কে ? ডোরা বলল, দেখি কে খায়। দুপুরের রান্না উমা সেরে রেখেছে। ডোরা হাত মুখ ধুয়ে সুশান্ত আমাকে উমাকে লাঞ্চ খাবার জন্য ডাকল। আমি শুয়ে ছিলাম, তাড়াতাড়ি খেতে গেলাম। খেতে খেতে ডোরা তার প্রফেসারি জীবনের ভার্জিনিয়ার অনেক মজার মজার গল্প করছিলো। সুশান্ত তাই শুয়ে হো হো করে হাসছিলো। আমি চুপ করে খেয়ে যাচ্ছিলাম। উমা বার বার ডোরার মুখের পানে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিল।
ডোরা বলল, উমাদি কুসুমরা বিকেলে আসলে কি খাওয়াব, বলো না ? উমা বলল, তোমার যা অভিরুচি। আমি বললাম, ডোরা চা দাও। পটেটো চিপস দাও, আর ডোনাট নিয়ে এস। নাশতা বানানোর হাঙ্গামার মধ্যে যেওনা। এইত উমা বেচারা এতদীর্ঘ পথ পাড়ির দীর্ঘ ক্লান্তি ওকে পেয়ে বসেছে। এর মধ্যে ওকে টেননা। ডোরা বলল, নতুন জামাই। দোলা আসছে, একটু আদর-আপ্যায়ন-সমাদর এর প্রয়োজন। আমি বললাম, একদিন নিমন্ত্রণ করে খাইয়ে দিও, তাহলেই চলবে। ডোরা মুচকি হাসছিল। আর উমার দিকে চেয়ে বলল, দেখছেন উমাদি, প্রশান্ত কি রকম কমার্শিয়াল মাইন্ডের। আমি বললাম, তা ছাড়া উপায় কি। তোমার বাড়ীতে এসে আমার নাতনী জামাইকে এত বাড়াবাড়ি করে, আদর-যতœ দেখিয়ে তোমাকে হয়রানি, পেরেশানি করে আমি বাড়বাড়ি করা মোটেই পছন্দ করিনা। আর তা ছাড়া তুমি প্রফেসারি কর। এসব নাস্তা বানানো বেশ হাঙ্গামায় তোমার কষ্ট করা, আমার আরও কষ্ট হয়।
উমা বলল, দেখছেন ডোরাদি প্রশান্ত বাবু আপনাকে কতটুকু ভালবাসে। ডোরা বলল, ছাই ভালবাসে, কচু। উমা বলল, আপনাকে ভালবেসে-ত বিয়েও করলনা। ডোরা বলল, আমি বুঝি বিয়ে করে বসে আছি ? এমনি করে নানা কথায় অনেক সময় কেটে গেল। আমি গিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলাম। মাথাটা ভীষণ ধরেছে। শরীরটা জ্বর জ্বর ভাব, ক্লান্তি যেন আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। আস্তে আস্তে যেন আমার ঘুমের ভান এসেছে। অথচ কানে আমি সব শুনতে পাচ্ছি। ঘুমিয়ে পরলাম। ৪টা বেজে গেছে, তবু আমার হুস নেই। দোলা এসে আমাকে জাগাল। ও দাদু এখনও ঘুমিয়ে ? দেখ কচ কুসুম নতুন জামাই সবাই তোমাকে দেখতে এসেছে। রাজ্যের ফল-মিষ্টি এনে হাজির। আমি বললাম, এত সব জিনিস পত্র কেন ?
(চলবে——–)