মনপুরায় ৩ ট্রলার ডুবির ঘটনার ৯ ঘন্টা পর নিখোঁজ ২০ জেলে উদ্ধার

নজরুল ইসলাম মামুন, মনপুরা ॥ ভোলার মনপুরার মেঘনার শেষ প্রান্তে প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারের তলা ফেঁটে ৩ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মনপুরার ২টি ও নোয়াখালী জেলার সূবর্ণচরের ১টি। ডুবে যাওয়া ৩ ট্রলারের মধ্যে মনপুরার ২ ট্রলারে থাকা ৩৬ জেলের মধ্যে ২০ জেলে নিখোঁজ হওয়ার ৯ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডুবে যাওয়া ট্রলারের মালিক নান্নু মাঝি ও দুলাল মাঝি। বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় মনপুরা উপজেলার দক্ষিণে চরনিজাম সংলগ্ন ভাসানচর থেকে নিখোঁজ ২০ জেলেকে উদ্ধার করে মনপুরা নিয়ে আসে ট্রলার নিয়ে উদ্ধার অভিযানে যাওয়া আড়তদার এনাম হাওলাদার। এর আগে বুধবার সকাল ১০ টায় মনপুরার মেঘনার শেষ প্রান্ত চরনিজামের পূর্বপাশে মেঘনায় ইলিশ শিকারের সময় এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে নিখোঁজ ২০ জেলেকে উদ্ধার ও ট্রলার ডুবির ঘটনা নিশ্চিত করেন মনপুরা উপজেলার ৪ নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল ও মনপুরার ডুবে যাওয়া ২ ট্রলারের আড়তদার এনাম হাওলাদার ও ট্রলারের মালিকপক্ষ।
ডুবে যাওয়া ট্রলার ৩ টি হলো, মনপুরার নান্নু মাঝির ট্রলার এফবি আয়শা ও দুলাল মাঝির ট্রলার। অপরটি নোয়াখালীর সূর্বণচরের নয়ন মাঝির ট্রলার এফবি মায়ের দোয়া। এর মধ্যে নান্নু মাঝির ট্রলারে থাকা ৯ জেলে ও দুলাল মাঝির ট্রলারে থাকা ১১ জেলে নিখোঁজ হওয়ার ৯ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়।

অপরদিকে নোয়াখালীর জেলার সূবর্ণচরের এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারে থাকা ১৪ জেলেকে উদ্ধার করেছে পাশ্ববর্তী মেঘনায় মাছ শিকারে থাকা মনপুরার মিল্লাত মাঝি ওরপে নুরনবী মাঝির ট্রলার। পরে উদ্ধার হওয়া মনপুরা ও নোয়খালীর সূবর্ণচরের জেলেদের ট্রলারে করে মনপুরা নিয়ে আসা হয়। পরে নোয়াখালীর সূবর্ণচরের মাঝিরা মনপুরা থেকে স্পীডবোটযোগে নোয়াখালী চলে যায়।
নিখোঁজ থেকে উদ্ধার হওয়া ২০ জেলেরা হলেন, দুলাল মাঝির ট্রলারের রসিদ মাঝি, আলমগীর, জাকের হাং, চাঁন মিয়া, বিলব চন্দ্র দাস, লোকমান, শরিফ, দুলাল মোল্লা, রাজিব, শাকিব। অপরদিকে নান্নু মাঝির ট্রলারের ৯ জেলে হলেন, রায়হান, সোহাগ, বসু, আজগর আলী, দেলোয়ার হোসেন, আরিফুল হক, আরব আলী ও কিরন মাঝি। এদের সবার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
অপরদিকে সুবর্ণচরের এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন, হোসেন আহম্মদ, আজগর হোসেন, শাহে আলম, আবুল কালাম, আল-আমিন, বশির, জসিম, মিজান উদ্দিন, রতন, আজগর, নুরে আলম, সিরাজ ও আলী। এদের সবার বাড়ি নোয়াখালীর সূবর্ণচরে বলে জানা যায়।
ট্রলার মালিক নান্নু মাঝি ও দুলাল মাঝি জানান, বুধবার সকাল ১০ টায় মনপুরার মেঘনার শেষ প্রান্ত চরনিজামের পূর্বপাশে জাল পেতে মাছ শিকারের সময় প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারের তলা ফেঁটে ৩ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ ২০ জেলেদের উদ্ধার করে নিয়ে মনপুরা নিয়ে আসা হয়েছে। সবাই যার যার বাড়িতে চলে গেছে। এছাড়াও নোয়াখালীর সূর্বণ চরের নয়ন মাঝির ট্রলার এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারে থাকা ১৪ জেলেকে মিল্লাত মাঝি ওরপে নুরনবী মাঝি উদ্ধারে করে মনপুরা নিয়ে আসার পর জেলেরা মনপুরা থেকে স্পীডবোট করে নোয়াখালী চলে গেছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অলি উল্লা কাজল জানান, মনপুরার ২ টি ও নোয়াখালীর সূবর্ণ চরে ১ টি ট্রলারসহ ৩ টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ ২০ জেলে সহ ট্রলার উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরার ডুবে যাওয়া ২ টি ট্রলারের আড়তদার এনাম হাওলাদার জানান, প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে তলা ফেঁটে ২ ট্রলার ডুবির ঘটনার খবর পেয়ে ট্রলার নিয়ে চরনিজাম গিয়ে ভাসানচর থেকে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার করে মনপুরা নিয়ে আসা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ সকল জেলেকে উদ্ধার হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মোঃ হানিফ জানান, মেঘনায় প্রবল ঢেউয়ে ট্রলার ডুবি ঘটনায় নিখোঁজ সকল জেলে উদ্ধার হয়েছে। দূর্ঘটনায় পড়া ট্রলারগুলো উদ্ধার হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।