তরুণ ফ্রিল্যান্সার আতিকুরের মাসিক আয় ৩ লাখ টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট : ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার আতিকুর রহমানকে এত দিন সবাই তজুমদ্দিন সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে চিনতো। তবে অনলাইন দুনিয়ায় তার আরেক পরিচয়—একজন সফল ফ্রিল্যান্সার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও দক্ষ প্রশিক্ষক।

পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে আতিকুর এর মাসিক আয় প্রায় তিন লাখ টাকা। অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করতে ইচ্ছুক এমন অনেককে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। এই তরুণের কাছে অনলাইন ভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় শতাধিক তরুণ তরুণী ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে তার টিমে নিয়মিত কাজ করছেন।

আতিকুর রহমান জানান, ২০১৪ সাল থেকে তিনি ফ্রিল্যান্সিং করছেন। ২০১৪ সালে কাজ শুরু করলেও সফলতা পেয়েছেন ২০১৭ সালে। সে আরো জানায় ‘যখন ফ্রিল্যান্সিং শেখা শুরু করি, তখন আমার পরিবার ছাড়া কেউ সমর্থন করেনি। ইনকাম যখন শুরু করি এলাকার মানুষ আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করা শুরু করেন, কেউ কেউ বলতেন আমি অবৈধ পথে টাকা উপার্জন করি। আবার কেউ কেউ বলতেন আমি জ্বিনের ব্যবসা করি। তাদের সমালোচনায় রাগে ক্ষোভে দুঃখে আমি এলাকা ছেড়ে রাজশাহীতে চলে আসি। সেখানকার একজন ফ্রিল্যান্সারের সাথে পূণরায় কাজ শুরু করি। তবে বর্তমানে সবকিছু সহজ মনে হয়। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে যারা বলেছিলো এইগুলো দিয়ে জীবন চলবে না, শুধু শুধু সময় নষ্ট, তাদের ধারণা এখন বদলে গেছে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়ায় এখন সবাই সমর্থন দিচ্ছে। ‘আমার ছোটবেলা থেকে স্মার্ট ফোন এবং কম্পিউটারের উপর বেশ আগ্রহ ছিলো। আমার জীবনে অনলাইনে প্রথম আয় ছিল ১০ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৮শত টাকার মতো। বর্তমানে আমার মাসিক আয় প্রায় তিন লাখ টাকার মতো।’

একাধিক প্ল্যাটফর্মে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করেন আতিকুর। তিনি বর্তমানে ফাইবার এবং আপওয়ার্ক এর টপ রেটেড সেলার। এখন পর্যন্ত তিনি বিদেশি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১হাজার এর বেশি বায়ার এর সাথে কাজ করেছেন।

চাকরি না খুঁজে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে ‘ফ্রিল্যান্সিং’ বা নতুন কিছু করায় বিশ্বাসী এই তরুণ বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয়ের ইচ্ছে থাকলে কাউকে বেকার থাকতে হবে না। অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ভুল জায়গায় শিখতে গিয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ জন্য সঠিক জায়গায় সঠিক নিয়মে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আতিকুরের পিতা মহিউদ্দিন জানান, ছেলেকে বলতাম সরকারি চাকরি নিতে, কিন্তু সে সবসময় কম্পিউটার নিয়ে পরে থাকতো। প্রতিবেশিরা ছেলেকে নিয়ে যখন অনেক সমালোচনা করতো তখন একজন বাবা হিসেবে আমি খুবই কষ্ট পেতাম। কিন্তু এখন আমার ছেলের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য সমালোচকরা তাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে আসে। ছেলের সফলতা দেখে আমি গর্ববোধ করছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।