সকলের সহযোগিতায় ভালো ভাবে বাঁচতে চায় লালমোহনের মোস্তফা
জাহিদ দুলাল, লালমোহন ॥ মো. মোস্তফা মিয়া। বয়স প্রায় ৪০ বছর। এ বয়সেই কষ্টের শেষ নেই তার। নারিকেল গাছ পরিষ্কার করতে উঠে নিচে পড়ে যায় সে। ২০১৭ সালে এ ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় তার পা ও কোমড় ভেঙে যায়। এ জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় তাকে। এরপর থেকেই মোস্তফার জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। অর্থের অভাবে পরিপূর্ণ চিকিৎসা করাতে না পারায় কোমড় ও পায়ের বিভিন্ন স্থানে ঘা হয়ে গেছে। বর্তমানে জীবন বাঁচাতে একটি ভাঙা হুইল চেয়ারে বসে হাত পেতে মানুষের থেকে সহায়তা তুলছেন মোস্তফা।
ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের নবীনগর এলাকার মুন্সি বাড়ির আব্দুল আজিজের ছেলে মো. মোস্তফা মিয়া। সংসারে রয়েছে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে। এর মধ্যে বড় মেয়েকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়ে অর্থাভাবে আর পড়াতে পারেননি। এখন বন্ধ তার পড়ালেখা। অন্যদিকে ছোট মেয়ে বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। সে কোন পর্যন্ত পড়তে পারবে তাও জানেন না মোস্তফা মিয়া।
নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ওই দুর্ঘটনার আগে দিনমজুরির কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই চলছিল। তবে ওই দুর্ঘটনার পর থেকেই আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। টাকার অভাবে পুরোপুরি চিকিৎসা করাতে না পারায় পঙ্গুত্ব বরণ করি। যার ফলে পেটের তাগিদে আর সংসার চালাতে মানুষের কাছ থেকে সহায়তা চান। মানুষের দেওয়া সহায়তায় তার দৈনিক প্রায় তিনশত টাকার মতো হয়। যা দিয়ে নিজের সংসার ও ওষুধ চলে। তবে ঠিকমতো ওষুধও কিনতে পারেন না তিনি। দৈনিক তিনটি ওষুধ খাওয়ার কথা থাকলেও অর্থাভাবে খাচ্ছেন মাত্র একটি ওষুধ।
মোস্তফা আরো বলেন, আমার নামে একটি পঙ্গু ভাতা আছে। তিন মাস পর পর ওই ভাতার টাকা পাই। যা দিয়ে কিছুই হয় না। তাই বাধ্য হয়ে একটি ভাঙা হুইল চেয়ারে বসে মানুষের কাছে হাত পাতি। হুইল চেয়ারটিও নাজুক। এখন একটি নতুন হুইল চেয়ারের দরকার। এছাড়া চিকিৎসা করাতে দরকার অর্থের। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ; আমার জন্য নতুন একটি হুইল চেয়ার, চিকিৎসার জন্য অর্থ এবং সংসার পরিচালনার জন্য একটি মুদি দোকানের ব্যবস্থা করার। যাতে করে মানুষের কাছে হাত না পেতে পরিবার পরিজন নিয়ে সামনের দিনগুলো ভালোভাবে বাঁচতে পারি।