বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার বেতুয়া-মনপুরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
মনপুরায় গলাকাটা দামে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস
* ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডার ডিলার বিক্রি করছে ১৩৯০।
* খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৪৫০ টাকা।
নজরুল ইসলাম মামুন, মনপুরা ॥ ভোলার মনপুরায় বিইআরসি বেঁধে দেওয়া দামে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি না করে গলাকাটা দামে বিক্রি করছে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা। এতে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা। নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও উপজেলা প্রশাসন হাট-বাজার তদারকি না করায় বাড়তি দামে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয় করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা। তবে দামের এই আকাশ পাতাল পার্থক্যের জন্য বিভিন্ন হাট-বাজারের খুচরা বিক্রেতারা দেখাচ্ছে ডিলারদের। আর ডিলারা দেখাচ্ছে কোম্পানিকে।
জানা যায়, মার্চ মাসে ১২ কেজি এলপিজির একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম সরকারি ঘোষণা করে ১১৭৮ টাকা। কিন্তু মার্চ মাস পেরিয়ে এপ্রিল চললেও উপজেলার কোথাও সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডার। অথচ উপজেলার সর্বত্রই গলাকাটা দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার।
উপজেলার হাজিরহাট বাজারের খুচরা বিক্রিতা বিপ্লব, লোকমান ও মনির জানান, বসুন্ধরা ও ওমেরা ডিলারদের কাছ থেকে ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয় করেছেন ১৩৯০ টাকায়। তাই তারা ১৪৫০ টাকায় খুচরা বিক্রি করছেন। উপজেলার প্রেসক্লাব সংলগ্ন চায়ের দোকানদার রুবেল, আবু মুচা শুক্রবার ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার গ্যাস করেছেন ১৪৫০ টাকায়।
এছাড়াও উপজেলার ফকিরহাট বাজারে মামুন নামে এক গ্রাহক কিনেছেন ১৪৮০ টাকায়। সেখানে বাংলাবাজার এলাকার গ্রাহকরা ক্রয় করছেন ১৪৬০ টাকায়। এদিকে উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের হোটেল ব্যবসায়ীরা ১৫০০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার কিনছেন, অপরদিকে মনপুরার রামনেওয়াজ বাজার হোটেল ব্যবসায়ী, গ্রাহকরা কিনছেন ১৪৫০ টাকায়। আবার স্থান বেঁধে কোথাও এর দাম আরও বেশি বলে ভোক্তারা জানিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ভোক্তারা জানান, মার্চ মাস থেকে ১২ কেজি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কমেছে কিন্তু মনপুরায় দাম কমেনি বরং বেড়েছে। তারা মনে করেন বাজার মনিটরিং ও উপজেলা প্রশাসনের তদারকির অভাবে বসুন্ধরা ও ওমেরা গ্যাস ডিলাররা জোট বেঁেধ ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রি করছে। ভোক্তারা দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে সরকারি দামে গ্যাস বিক্রির দাবী তুলেন।
এ ব্যাপারে ওমেরা কোম্পানীর ডিলার কিংকর চন্দ্র দে ও বসুন্ধরা কোম্পানীর ডিলার মোঃ কুদ্দুছ জানান, কোম্পানীর দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন তারা। তবে গত দুইদিন ধরে তারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন না।
এদিকে ভোক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার দিনভর মনপুরা থানার ওসি সাইদ আহমেদ এর নের্তৃত্বে পুলিশের একটি টিম উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার খুচরা বিক্রেতা ও ডিলারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন। সবাইকে সরকারি দামে গ্যাস বিক্রি করার জন্য নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সরকারি মূল্যে গ্যাস বিক্রির জন্য বলা হয়েছে। এরপরও তারা যদি বাড়তি দামে বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার দায়িত্বে থাকা চরফ্যাসন উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল নোমান জানান, দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।