সাবেক স্বামীর ঘরে উঠে আত্মহত্যার হুমকী তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী’র

চরফ্যাশনে আতংকে ঘরছাড়া এক পরিবার

চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥ ভোলার চরফ্যাশনের এওয়াজপুর ইউনিয়নে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ছনিয়া বেগম সাবেক স্বামী আবুল কাশেমের ঘর দখল করে অবস্থান নিয়েছেন। মারধর করে শ্বাশুড়ি হোসনেয়ারা বেগমকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় আগে থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বামী আবুল কাশেম। এখন ভয়ে বাড়ি যেতে পারছেন না শ্বশুড় আনিচল হক ফরাজিও। ফাঁকা বাড়িতে স্বামী ও শ্বশুড়ের দু’টি ঘর দখলে রেখে আত্মহত্যার হুমকী দিচ্ছেন ছনিয়া বেগম। ফলে ভয় আতংকে গ্রামছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বাড়ির বাসিন্দারা। এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আনিচল হক ফরাজির বাড়িতে ২৫ মার্চ, শনিবার থেকে চলছে এমন হুলুস্থ’ল কান্ড।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখাগেছে, বাড়ির দু’টি টিনশেড ঘরের একটিতে থাকেন আনিচল হক ফরাজি এবং অপর ঘরটিতে থাকেন পুত্র আবুল কাশেম। এখন তাদের কেউ বাড়িতে নেই। বাড়ির ঘর দু’টি আবুল কাশেমের সাবেক স্ত্রী ছনিয়া বেগমের দখলে।
আনিচল হক ফরাজি অভিযোগ করেন, লালমোহন উপজেলার চরলক্ষী গ্রামের মো. আনসার মিয়ার মেয়ে ছনিয়া বেগমের সাথে আবুল কাশেমের বিয়ে হয় ৫ বছর আগে। তাদের আরিয়ান নামে ৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। ছনিয়া বেগম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিকটকে আসক্ত হয়ে পর পুরুষের সাথে আপত্তিকর যোগাযোগে জড়িয়ে পরেন। যা নিয়ে পারিবারিক সম্পর্কে অবনতি ঘটে। যার ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আবুল কাশেম স্ত্রী ছনিয়াকে তালাক দেন। তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ছনিয়া বেগম স্বামী আবুল কাশেমকে আসামী করে ভোলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী হলে আবুল কাশেম আত্মগোপনে চলে যান।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও আবুল কাশেমের স্বজনরা জানান, গত ২৫ মার্চ শনিবার বিকেলে ছনিয়া বেগম তার ফুফু হনুফা এবং ফুফাতো ভাই মন্নানসহ বাড়িতে হানা দেন। তারা আবুল কাশেমের তালাবদ্ধ ঘরের তালাভেঙ্গে দখল নেন। পাশের শ্বশুড়ের ঘর থেকে শাশুড়ি হোসনেয়ারা বেগমকে পিটিয়ে বের করে ওই ঘরেরও দখল নেন। এসময় শ্বশুড় আনিচল হক ফরাজি বাড়ি ছিলেন না। পরে ঘরের মালামাল ভাংচুর এবং লুট করেন।ঘটনার পর থেকে আনিচল হক এবং স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম বাড়ি থেকে বিতারিত হয়ে চরফ্যাশন পৌর সদরের নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রিত আছেন।
আশ্রিত হোসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, ছনিয়ার বেপরোয়া চলাচল এবং জীবন যাপন নিয়ে সংসারে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছে। তার পেছনে অনেক প্রভাবশালীদের প্রভাব কাজ করছে। তাদের প্রভাবে ছনিয়া স্বামী আবুল কাশেমকে খাবারে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরে আরো একবার অন্ডকোষে আঘাত করে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এসব নিয়ে দীর্ঘ অশান্তির পর আবুল কাশেম তাকে তালাক দেন। কিন্ত এখন প্রভাবশালীদের প্রভাব নিয়ে ছনিয়া স্ত্রীর দাবী নিয়ে ঘর দখল করে মালামাল লুট করছে। মারধর করে শ্বশুড়-শাশুড়িকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এখন বাড়িতে অবস্থান নিয়ে আত্মহত্যা করে স্বামী, শ্বশুড়সহ সকলকে ফাঁসানোর হুমকী দিচ্ছে। ছনিয়ার এমন অবস্থান এবং অব্যহত হুমকীতে আবুল কাশেম ও তার বাবা-মা উদ্বেগ উৎকন্ঠায় আছেন। এ ঘটনায় শশীভূষণ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহন করেনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ছনিয়া বেগম বলেছেন, তালাকের বিষয় তার জানা নেই। তবে সমাজিকভাবে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিলে তিনি চলে যেতেন। কিন্ত মামলা চলমান থাকা অবস্থায় সামাজিক ফয়সালার সুযোগ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ছনিয়া বেগম কোন কথা বলেননি।
শশীভূষণ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান পাটোয়ারী জানান, বিষয়টি সমোঝতার জন্য উভয় পক্ষকে থানায় আসাতে বলা হয়েছে কিন্ত কেউ আসেনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।