ভোলায় তরমুজের সরবরাহ বাড়ায় কমে গেছে দাম ॥ কারো মুখে হাঁসি, কেউবা হতাশ

মোঃ হারুন অর রশীদ ॥ তরমুজের জন্য খ্যাত দ্বীপজেলা ভোলা। ইতোমধ্যেই তরমুজ কাটায় ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। চরের পর চর জুড়ে চলছে তরমুজ কাটা ও বিক্রি। ফলন হয়েছে খুবই ভালো। আগাম তরমুজ করেছেন যারা তাদের মুখে হাঁসি ফুটলেও সবেমাত্র পেকে আসা তরমুজ চাষিরা পড়েছেন বেকায়দায়। বৃস্টি তাদের বড় ধরনের স্বপ্ন কিছুটা ম্লান করে দিয়েছে। অন্যদিকে পাড় হওয়ার অপেক্ষায় তরমুজ ভরা ট্রাকগুলো ঘাটে আটকে আছে ফেরীর অপেক্ষায় কবে পাড় হবে তার নিশ্চয়তা নেই।


দ্বীপ জেলা ভোলার বিভিন্ন চর জুড়ে কৃষকেকের খেতে এখন তরমুজ আর তরমুজের সমারোহ। কাটা ও বিক্রিতে ব্যাস্ত কৃষক। তবে তরমুজ চাষের বড় এলাকা হচ্ছে চরফ্যাশন। ভোলার তরমুজ সুস্বাদু ও মিস্টি বলে সারা দেশেই ভোলার তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অনেকেই আগাম তরমুজ চাষ করেছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশায় এমন দিনটির আশা করেছিলো কৃষকরা।
কৃষকরা জানায় বিগত বছরের চেয়ে এবার তরমুজ চাষে খরচ পড়েছে বেশি। দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতির ফলে তাদের খরচ বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যে ভোলার বিভিন্ন চর ও প্রত্যন্ত চরে পাইকাররা আসতে শুরু করেছে। অনেকেই আগাম তরমুজ কিনে দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে অধিক লাভের আশায় নিয়ে লাভের মুখ দেখেছেন।


পাইকাররা জানান আগাম তরমুজ খেতের কানি কিনেছেন প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকায়। বাজারে যেটা বড় সাইজ ১২ থেকে ১৫ কেজি ওজন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৪শ’ ৫০ টাকায়। বিভিন্ন সাইজের তরমুজের বিভিন্ন দাম।
তবে বর্তমানে চিত্র উল্টো। বৃস্টি হওয়ায় কৃষকরা অনেকেই বড় ধরনের লোকশান থেকে বাঁচতে অধাপাকা তরমুজ কাটতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। বাজারে বেড়ে গেছে সরবরাহ, কিন্তু আশানরুম দাম মিলছেনা। বড় ধরনের বৃস্টি বা শিলা বৃস্টি হলে পথে বসতে হবে কৃষকদের। তাই তারা আগেভাগেই তরমুজ কাটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
এবার কৃষক চরের অনাবাদি জমিগুলোতেও তরমুজ চাষ করেছেন। খেতের মধ্যে তরমুজ কেটে স্তুপ করে তা ট্রলারে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন মোকামগুলোতে। কিন্তু বৃস্টি তরমুজ চাষিদের আশা অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে। ফেরীঘাটে আটকা পড়ে আছে তরমুজ ভর্তি অনেক ট্রাাক। কবে পাড় হবে তার নিশ্চয়তা নেই। পাইকাররাও হতাশার মধ্যে পড়েছে।


ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুয়ায়ী, এ বছর ভোলায় তরমুজের আবাদের লক্ষমাত্র ছিলো ১১ হাজার ২শ’ ৪৯ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে তার চেয়ে বেশী ১৮ হাজার ৩শ’ ৮৩ হেক্টর জমিতে ভোলা জেলায় তরমুজের আবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রশারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাসান ওয়ারেসুল কবীর জানান, ভালো তরমুজ হয়েছে। এটাকে বম্পার তরমুজ হয়েছে বলে বলা যায়। কৃষি বিভাগ তাদের সর্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। আশা করা যায় তারা এবার লাভবান হবেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।