সর্বশেষঃ

মধ্যরাত : পর্ব-১৪৭

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : ডোরা বলল, পৃথিবীর নিরানব্বই জন লোক সংসার ধর্ম পালন করে আসছে। ১শ’ জনের ভিতর ২-১ জন লোক খালি ব্যতিক্রম। আমার মতে তারা দার্শনিক না। হয় বোকা না হয় বেকুব। আমি অবাক হয়ে ডোরার মুখের দিকে চেয়ে রইলাম। ডোরা কি বলতে চায় ? সে একজন ডক্টরেট ইকনমিক্সের। ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটির প্রফেসার, আর একটা নাম করা উপন্যাস আকাশের কত রং এর একজন লেখিকা। দর্শণ বিজ্ঞান শাস্ত্র সবই যে বুঝে, না বুঝে বললে বোধ হয় আমি মনে এত আঘাত পেতামনা।

আমি কতক্ষণ চুপ করে থেকে উঠে যেতে চাইলাম। ডোরা বলল, বস। আমি বললাম, কাজ আছে। ডোরা বলল, তুমি সমস্ত জীবন বলে এসেছ কাজ আছে। অন্য লোকেরওত কাজ থাকতে পারে। এই কাজ করে জীবনের সবকিছু হেলায় হারিয়েছ, অন্যকেও হারিয়ে দিয়েছ। তোমার অসুখের সময় আমি আসতে চেয়েছিলাম। কেন আমায় বারণ করেছ ? আমি আসলে তোমার এমন কি ক্ষতি হোত। তোমার ব্যক্তিত্ব আছে, স্বত্মা আছে, দেমাগ আছে, অভিমান আছে, আমার নেই ? আমি আর কোন কথা বলতে পারলাম না। চুপ করে বসে থেকে টেবিলের উপর নখ দিয়ে আঁকে কষছিলাম। ডোরা বলল বল ? চুপ করে রইলে কেন ? আমি বললাম, ডোরা তোমার সব কথার উত্তর আমি একদিন এক এক করে সব দেব। ডোরা বলল, সেদিন তোমার কোনদিন আর আসবে না।
আমি উঠে চলে গেলাম। এদিক-ওদিক ঘুরে ঘুরে দেখলাম কেউ কোথায় কাছে নেই। দোলা ওর বিছানায় পাশ বালিশ কোলে করে শুয়ে আছে। উমা আশির্বাদের মঙ্গল প্রদীপের সলতে পাকাচ্ছে। সুশান্ত শুয়ে শুয়ে সেক্সপিয়ারের ট্রাজেডী পড়ছে। আমিও সুশান্তর ঘরে ঢুকে বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমি আড় নয়নে চেয়ে দেখলাম, ডোরা অনেকক্ষণ টেবিলের কাছে ডাইনিং চেয়ারটায় বসেছিল। দু’চোখ দিয়ে অভিমানে টপ টপ করে জল পরছিল। শাড়ীর আচল দিয়ে বার বার মুছে ফেলছিল। উমা এসে বলল ডোরাদি শরীর খারাপ লাগছে ? বলল না, আমি একটু বিশ্রাম নেব উমা। ডোরাকে নিজের বিছানায় বিছানা করে দিল।

(চলবে———–)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।