মধ্যরাত : ১৪৫

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

(গত পর্বের পর) : কসমেটিকস উমা পছন্দ করে অনেকগুলো কিনে ফেলল। দোলা নিজেও কয়েকটা রং পছন্দ করে নিল। আমি টাকা-পয়সার জন্য কোন চিন্তা করলাম না। নিজে এতকাল বিয়ে করিনি খরচ করতে শিখিনি, আজ দোলার জন্য দু’হাতে খরচ করছি; ত্যাগেই আনন্দ, ভোগে নয় মহত্ত্বে। ত্যাগে দানে আদর্শে মানুষ মানুষের মনে দাগ কাটে। জীবনে কোনদিন চিন্তা করে দেখি নাই, আমার এত পরিশ্রমের টাকা আমার নাতনীর বিয়েতে ব্যয় হয়ে নাতনীর মুখে হাঁসি দেখব। আমি নিজেও সুখী হতে পারলাম না। তবু একজন হাসুক, ভালবাসুক সুখী হোক।
সন্ধ্যাবেলা ভার্জিনিয়া থেকে ডোরার ফোন এল ও আসছে। সুশান্ত আমি টরেন্টো এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলাম। তার পরদিন বিকেলের প্লেনে ডোরা আসার কথা। দুপুর থাকতেই আমি সুশান্ত প্লেনের টাইম জানবার জন্য এয়ারপোর্টে ফোন করলাম। ওরা বলল ৫টা ২৫ মিনিটে প্লেন ইন করবে। আমি সেই মতে সুশান্তকে নিয়ে ওকে আনতে গেলাম। ঠিক ৫টা ২৫ মিনিটে প্লেন মাটি স্পর্শ করল। প্রায় ঘণ্টা খানেক লাগল ডোরার বাইরে বের হয়ে আসতে। ডোরা এক লাল পাড়ের সাদা জর্জেট পড়েছিল। কানে দুটো ছোট সারা পাথরের ফুল, গলায় মুক্তোর সাদা মালা, বাম হাতে ঘড়ি। ওকে দেখে আমি চিনলাম, সুশান্তও চিনে ফেলল। ওর ছোট্ট লাগেজ একটি চামরার সুটকেস এয়ারপোর্টের গাড়ীতে করে নিজেই চালিয়ে নিয়ে আসছে। আমি ও সুশান্ত হেসে ওকে অভ্যর্থনা জানালাম। ডোরা খুশী খুশী মুখে এগিয়ে এসে আমাদের সাথে করমর্দন করল। আমরা ওর জিনিসপত্র গাড়ীতে তুলে গাড়ী স্ট্রার্ট দিলাম।
ডোরা বলল, উমাদি আসেনি ? আশির্বাদের আনুষ্ঠানিক অনেক কাজ বাকী। যেগুলো মেয়েদের পরিচালিত হওয়া দরকার। তার সব ভারই পরেছে উমার উপর। সেজন্য ওকে আমি বলিনি, শুধু সুশান্তকে নিয়েই কেটে পরেছি। ডোরা বলল, টরেন্টো অনেক বড় মহানগর। মন্ট্রিলের চেয়ে ঢেড় ঢেড় বড়। আমি বললাম হ্যাঁ। সুশান্ত ড্রাইভ করছিল, আমি ওর পাশের সিটে বসেছিলাম। ডোরা পিছনের সিটে বসেছিল।

(চলবে—–)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।