নির্মাণের ১৬ বছরেও উদ্বোধন হয়নি ভোলার মনপুরার আবহাওয়া কেন্দ্র

ভোলার বাণী ডেস্ক ॥ নির্মাণের ১৬ বছরেও উদ্বোধন হয়নি ভোলা জেলার মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় অবস্থিত প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি। উদ্বোধন না হলেও দুই কর্মকর্তা ও দুই নিরাপত্তা প্রহরী অফিস না করেই বছরের পর বছর বেতন তুলে নিচ্ছেন। কোন দূর্যোগ দেখা দিলে এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মানুষের একমাত্র ভরসা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি তথা সিপিপি’র গণসচেতনতামূলক প্রচারের ওপর। এদিকে অজানা কারণে আধুনিক ৩ তলা বিশিষ্ট ভবন দুটি উদ্বোধন হচ্ছেনা বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন খোদ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০০৬ সালে নির্মাণের পর থেকে এখন অবদি আবহাওয়া অফিসটি তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে। বহু খোঁজাখুঁজির পর দেখা মেলে অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী আনসার সদস্য মো. আজাদের সঙ্গে। আজাদ জানায়, আবহাওয়া অফিসে দুই জন নিরাপত্তা প্রহরীর একজন ছুটিতে রয়েছে। এছাড়াও দুই জন কর্মকর্তা রয়েছেন। কিন্তু ভেতরে গিয়ে দুজন কর্মকর্তার মধ্যে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধিনে আধুনিক যন্ত্রপাতির সুবিধা সম্পন্ন প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে দুই কর্মকর্তাকে এই অফিসে পদায়ন করা হয়। পদায়নের পর থেকে দুই কর্মকর্তাকেই দেখেননি বলে জানান এলাকাবাসী। শুধুমাত্র মাস শেষে বেতন তুলে নিয়ে চলে যান তারা। এছাড়া কোন প্রকার ঘূর্ণিঝড় কিংবা কোন মহা দূর্যোগেও দেখা মেলে না এই কর্মকর্তাদের।
এদিকে, মনপুরা অবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটির পদায়নপ্রাপ্ত উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম বহুদিন যাবৎ রাজশাহীতে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাকে উপজেলা পরিষদের কেউ চেনেন না বলে জানিয়েছেন। এছাড়া, উপজেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটিতে রয়েছে জনবল সংকট। প্রয়োজনীয় যত্রাংশ ও উন্নত রাডার সিস্টেম সংযুক্ত থাকলেও উদ্বোধনের অভাবে মূলত অকার্যকর রয়েছে অফিসের কর্মতৎপরতা।
মনপুরা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমি মনপুরায় কর্মরত আছি। শুধু উদ্বোধনের অভাবে কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে কবে নাগাদ আবহাওয়া অফিসটি উদ্বোধন করা হবে সে ব্যাপারে কিছুই আমার জানা নেই।
মনপুরা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে প্রেষণে মনপুরায় পদায়ন করা হয়েছে। আমাদের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি চট্টগ্রাম জোনের আওতায় রয়েছে। তাছাড়া এটি এখনো রাজস্ব খাতে উন্নীত হয়নি। কি কারণে অফিসটি উদ্বোধন করা হচ্ছেনা তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে উদ্বোধনের জন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
আবহাওয়া অফিসটি উদ্বোধন না হওয়া সম্পর্কে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান বলেন, অজানা কারণে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি উদ্বোধন হচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।