পা-ভুঁড়ি-মাথার মাংসের লোভে অপরাধে জড়িয়ে পড়েন ইলিশার মান্নানের পরিবার

ভোলার ইলিশায় গরু চুরির ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥ আটক-২

ইয়ামিন হোসেন ॥ লোভ ভালো কিন্তু কিছু লোভ জীবন কে শেষ করে দিয়ে যায়। ধূলিসাৎ করে দেয় সমাজে ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলার। ছোট ছোট লোভগুলো একদিন বড় আকারে রুপ নেয় আর তখনই মানুষ অপরাধে জড়িয়ে পরে। তেমনটাই হয়েছে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশার আলোচিত গরু চোর মান্নানের পরিবারে। “পূর্ব ইলিশায় গরু চুরির টাকায় বিলাশবহুল ভবন” গত ১৯শে ফেব্রুয়ারীতে এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গরু চুরিতে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা জানতে চেয়েছে পাঠক। ভোলার বাণীর অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে কি ভাবে জড়িয়ে পরে মান্নানের পরিবার।
সরজমিন পূর্ব ইলিশা মান্নানের বাসায় গিয়ে তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায় ঘটনার রহস্য। পূর্ব ইলিশা ভোলা লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশেই মান্নানের বাড়ী, বাড়ীর সামনে মান্নান বেপারীর নামে বিশাল মার্কেট। অন্যদিকে প্রতিবেশীদের সাথে মান্নানের পরিবারের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিলো না এবং তেমন কারো আশা যাওয়া ছিলো না মান্নানের বাড়ীতে। এই সুযোগে পরানগঞ্জ বাজারের কয়েকজন কসাই নিয়মিত গরু জবাই করতো মান্নানের বাসার সামনে।
গরু জবাই শেষে পা, ভুঁড়ি, একটু কলিজা দিয়ে যেতো মান্নানের স্ত্রী রোকসানাকে। কলিজা, ভুঁড়ি আর গরুর পায়ে লোভ হয়ে যায় রোকসানার। এক পর্যায়ে চোরাই গরুর আশ্রয়দাতা হয়ে যান রোকসানা। নিরিবিলি বাড়ীতেই গডফাদারের দায়িত্ব পালন করেন লেডি রোকসানা। রোকসানার ছেলে বিল্লাল জানান, মাইনউদ্দিন কসাই আমাদের বাড়ীতে গরু জবাই দিয়ে ফ্রিজে পা, ভুঁড়িসহ অনেক কিছু রাখতো। আমি তখনি নিষেধ করেছি বলে জানান বিল্লাল।
মান্নান বেপারীর পুত্রবধূ বিবি রাবেয়া বলেন, আমার শাশুড়ির লোভে আজ স্বামী ছেলেসহ পুরো পরিবার শেষ। এ সময় তিনি বলেন, আমার শাশুড়ি শুধু জড়িত না মাইনউদ্দিনেও জড়িত।
রাবেয়া অভিযোগ করে বলেন, এই ঘটনার পর আমাদের কাছে অনেকেই নানান ভাবে টাকা দাবী করছে তবে তার শ্বশুরের নামে মার্কেট ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে করেছে দাবী করে বলেন ব্যাংক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে মার্কেট করা হয়েছে। গরু চুরির টাকায় নয়। ২৫ লাখে এই তিনতলা মার্কেট ? এর উত্তরে বলেন আমার শাশুড়ি করছে যা করছে আমরা জানিনা। আমার স্বামী চরমোনাই করে।
এদিকে এই ঘটনার সাথে পূর্ব ইলিশার পরানগঞ্জ, জংশন, রাজাপুরের জনতাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার কসাইরা জড়িত বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে। গত ১৮ই ফেব্রুয়ারীতে পূর্ব ইলিশার চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটনের নেতৃত্বে গুপ্তমুন্সী এলাকায় গরুর গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়ার পর হঠাৎ বড় লোক হওয়া কসাইরা বিভিন্ন দরবারে দৌড়ঝাঁপ করেছে বলেও জানা গেছে।
তবে গরু চুরির সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেনো কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা ও চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, এই ঘটনায় মাকসুদ নামের এক গরুর মালিক ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত রেখে মামলা করেছে, যার নং-৩২/২৩। এজাহারভুক্ত রোকসানা ও জাকির নামের দুইজন গ্রেপ্তার আছেন এবং তাদের ৫দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।