ভোলার বোরহানউদ্দিনে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি ॥ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার কর্তৃক কুলসুম রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর মাস্টার ও এক ব্যবসায়ীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টায় উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজারের মেইন সড়কে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে কুলসুম রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও বোরহানগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এ মানববন্ধনে শত শত শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও টবগী ইউনিয়নের সাধারণ মানুষও উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত শনিবার আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান বোরহানগঞ্জ বাজার হয়ে যাওয়ার পথে কুলসুম রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর মাষ্টারের সাথে দেখা হলে চেয়ারম্যানকে সালাম না দেওয়া চওড়া হয়ে শিক্ষক আলমগীর মাস্টারকে বোরহানগঞ্জ বাজারে জনসমক্ষে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এই ঘটনায় আকবর নামে এক ব্যবসায়ী বাঁধা দিলে তার উপর চওড়া হয়ে হামলা করেন। শিক্ষক ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন শিক্ষক সমিতি ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতি।
মানবন্ধনে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করে কুলসুম রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফকরুল বলেন, আলমগীর মাস্টারের ও ব্যবসায়ী মোঃ আকবরের ওপর যে ভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় বোরহানগঞ্জ বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে তাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাই পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হউক। তাহা না হলে আগামিতে প্রয়োজনে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মানববন্ধন করা হবে।


তিনি আরো বলেন, আলমগীর স্যার গত ২২’ বছর যাবত সম্মানের সাথে শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। তাকে অনেকেই চিনে ও জানে, তিনি সবার সাথে অল্পতেই মিশতে পারেন। আলমগীর মাস্টারের অপমান আমরা শিক্ষক সংগঠন মেনে নিতে পারি না। আজকের মানববন্ধন এর মাধ্যমে আলাউদ্দিন সর্দারকে গ্রেফতার না করা হয়, তাহলে জেলা পর্যায়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
উপজেলার শিক্ষক সমিতির সভাপতি জ্ঞানদা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহেল বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব অতীত ভুলে যাবেন না, একজন শিক্ষককে যে সম্মান দিতে জানেনা, সে সাধারণ মানুষকে কিভাবে সম্মান করবে, সাধারণ মানুষ আপনার আচরণে বিব্রত এই মানববন্ধনে জনতার উপস্থিতি তাই বলে, জনসম্মুখে আলমগীর স্যারের কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন আরও বৃহত্তরে রুপান্তরিত হবে। এছাড়াও মানববন্ধনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে ব্যবসায়ী সমাজের অনেক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য দেন। সবার একটাই দাবী, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দারকে পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হউক।
মানববন্ধনে চেয়ারম্যানের হামলার শিকার ভুক্তভোগী মোঃ আকবর বলেন, আপনি জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছেন, আপনার চলাফেরা থাকবে সাধারণ মানুষের মতো। আপনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে লক্ষ করে দেখি আপনি সব সময় ফিল্ম স্টাইলে চলা ফেরা করেন। আপনার ছেলে রোহান সর্দার রাতের আঁধার সাধারণ মানুষের ওপর চাঁদাবাজি করে থাকে। কারো সাথে কথা বলতে গেলে মনে হয় মারবে, জনগনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি আপনি ১ বছর গেলো রাখতে পারেনি। আপনি পক্ষিয়া ইউনিয়নে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে পক্ষিয়াবাসীকে আতংক করে রেখেছেন। সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ।
অভিযোগের এর বিষয়ে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদারের এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারের ডাক নিয়ে আমার সাথে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই মানববন্ধন তৃতীয় ব্যক্তির ইন্ধনে করা হয়েছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।