চরফ্যাশন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হলেন প্রফেসর মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপন
দেশের জিডিপিতে তামাকের অবদান কমাতে হবে
এনজিও বিষয়ক প্রতিনিধি ॥ তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে দেশের জিডিপিতে তামাকের অবদান কমাতে হবে এবং এর বিকল্প রাজস্ব খাতগুলোর প্রচার বাড়াতে হবে। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) মো: আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, সচিব, সুরক্ষাসেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, এই মন্তব্য করেন। ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র (ডরপ) এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশ এর একটি প্রতিনিধিদল মাননীয় সচিব মহোদয়ের সাথে সচিবালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ পরবর্তী বৈঠকে সংশোধিত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা হয় এবং মাননীয় সচিব মহোদয় তার সুচিন্তিত মতামত দেন। তিনি আশ্বাস দেন যে আইনটি দ্রুত পাশ করতে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়ই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের ফলে উদ্ভূত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করেন এবং বলেন, “তামাকজাত পণ্যের বিকল্প রাজস্ব খাতগুলো বিবেচনা করতে হবে। তিনি তামাকজাত পণ্যে প্রচলিত মোড়কের পরিবর্তে স্বাস্থ্য সতর্ক বার্তার আকার ৯০% এর ও অধিক অর্থাৎ ক্লিন প্যাকেজিং এর পক্ষে মত দেন।
সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব মহোদয় আরও মন্তব্য করেন যে প্রচলিত তামাকজাত পণ্যের মতই ই-সিগারেট বা হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট (এইচটিপি) ও সমান ক্ষতিকর এবং এগুলোর ব্যবহারও রোধ করা প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলোতে সিগারেটের মতই ই-সিগারেটকেও সমান ক্ষতিকর বলে বিবেচনা করা হয়।
মাননীয় সচিব মহোদয় আশ্বাস দেন যে সংশোধিত খসড়া তামাক আইনটির প্রসঙ্গ সচিব কমিটির সভায় উত্থাপিত হলে তিনি এটি দ্রুত পাশের পক্ষে মতামত দেবেন।
মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী দ্রুত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশের লক্ষ্যে অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরগুলিকেও ডর্প এর উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন। যৌথ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আজহার আলী তালুকদার, অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী উপদেষ্টা, ডরপ, মোঃ যোবায়ের হাসান, উপ-নির্বাহী পরিচালক, ডর্প, রুবিনা ইসলাম, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রকল্প, ডর্প, মোঃ আব্দুস সালাম মিয়া, ম্যানেজার (প্রোগ্রাম), সিটিএফকে বাংলাদেশ, এবং সৈকত কবির শায়ক, মিডিয়া অ্যান্ড এনগেজমেন্ট কোঅর্ডিনেটর, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রকল্প, ডরপ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ইশরাত চৌধুরী।
উল্লেখ্য যে, জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং এফসিটিসি’র সাথে সামঞ্জস্য করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে সংশোধনের অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেম ওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’র সাথে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে সংশোধনের অঙ্গীকার করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন কমিটি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) অধিকতর শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত, ওবেসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত গ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চূড়ান্ত খসড়াটি বর্তমানে মন্ত্রীপরিষদে পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
ডরপ কর্তৃক উত্থাপিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার ৬টি প্রস্তাব হলো- সকল প্রকার উন্মুক্ত স্থান এবং গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা শলাকা বিক্রয় বন্ধ করা এবং বিড়ি ও সিগারেটের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা।